Press "Enter" to skip to content

আঁশবিহীন মাছ খাওয়া কেন জায়েজ না?

এস, এ, এ

ভাত ও মাছ আমাদের প্রধান খাদ্য । আমরা মাছে ভাতে বাঙ্গালি । মাছ খুবই সুস্বাদু। আমিষ,তেল, ভিটামিন ও খনিজ লবণের একটি গুরুত্বপূর্ন উৎস হচ্ছে মাছ । মাছের প্রায় ২০ শতাংশই আমিষ । প্রথম শ্রেণীর
আমিষ । এতে অত্যাবশকীও অ্যামাইনো এসিডের সবগুলোই উপস্থিত । মাছের আমিষের সবটুকুই হজম হয় ,প্রায় ৮৫-৯৫ ভাগ । আমিষ আমাদের শরীর গঠন, শরীরের ক্ষয় পূরণ এবং
রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে ।
মাছে আমিষের পরিমাণ বেশি , আর তেল তুলনামুলকভাবে কম । আবার তেল যা আছে তার বেশিরভাগই পলি আন্স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড , যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় । বরং উপকারি । তবে কিছু মাছ রয়েছে যার উপকারিতার চেয়ে অপকারিতায় বেশি। আসুন জেনে নেই কেন শিয়ারা আঁশ বিহিন মাছ খায় না?

১- বার ইমামীয়া শীয়াদের পবিত্র বারজন ইমাম (আঃ) গনের পরিস্কার নির্দেশ আছে যে , আঁশবিহীন মাছ সম্পূর্নরুপে পরিহার করতে হবে। কিছুতেই আঁশবিহীন যে কোন মাছ খাওয়া একদম চলবে না ।
যেহেতু পবিত্র ইমাম (আঃ) গনের সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেহেতু বার ইমামীয়া শীয়াগন আঁশবিহীন যে কোন মাছ সম্পূর্নরুপে পরিহার করে থাকেন ।

পঞ্চম ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আঃ) বলেন যে ,
” — আঁশওয়ালা যে কোন মাছ খাও এবং আঁশবিহীন যে কোন মাছ খেও না — ” । (আল কোলাইনী , আল কাফি , খন্ড – ৬ , পৃ – ২১৯)

আঁশবিহীন মাছ নিষিদ্বের বৈজ্ঞানিক কারন সমূহ:

১) – আঁশ মাছের শরীরের ফিজিওলজিকাল ব্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে , যা পানিতে থাকা নানারকম ব্যাক্টেরিয়া আর অনুজীবকে মাছের শরীরে ঢুকতে বাধা দেয় ।
তাই , স্বাভাবিকভাবেই যে মাছের আঁশ নেই তার শরীরে নানা রকম ক্ষতিকর অনুজীব থাকে ।
উদাহরণস্বরুপ , Diphyllobothrium নামক ফিতা ক্রিমির কথা বলা যায় , যেটা কেবল আঁশবিহীন মাছেই পাওয়া যায় ।
বলা বাহুল্য , শুকরের মাংসেও কিন্ত মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানারকম জীবাণু আর tapeworm থাকে ।

২) – আঁশবিহীন মাছ কিন্ত প্রচুর বাজে জিনিষ খায় ।
শুকর যেমন মল খায় , আঁশবিহীন মাছ যেমন পাংগাস , আইর , বোয়াল , টেংরা , পাবদা , মাগুর , শিং ইত্যাদি আঁশবিহীন মাছ দেদারসে মল খেয়ে থাকে ।
সচেতন বুদ্বিমান মানুষ যে কিভাবে এসব মাছ খায় !!!

৩) -সমুদ্র কিংবা নদীতে মিশে যাওয়া কারখানার বর্জ্য কিন্ত আঁশবিহীন মাছেরাই বেশি খেয়ে থাকে । সুতারাং আঁশবিহীন মাছ খেলে আপনি বিনামূল্যে কলকারখানার রাসায়ানিক বিষাক্ত ভিটামিন পাচ্ছেন !!!

৪) – সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে , আঁশবিহীন মাছের শরীরে মারকারি (পারদ) এর মাত্রা অনেক বেশী , যা মানুষের শরীরে ঢুকলে মারাত্বক স্বাস্থ্যঝুকি তৈরি হতে পারে । পশ্চিমা বিশ্বের লোকেরা ইতিমধ্যেই আঁশবিহীন মাছ খাওয়ার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে শুরু করেছে ।

৫) – এছাড়াও সম্প্রতি একজন প্রাণী বিজ্ঞানী পরীক্ষা করে দেখেছেন যে , আঁশওয়ালা মাছের পাকস্থলীর সাথে আঁশবিহীন মাছের পাকস্থলীর অনেক পার্থক্য রয়েছে ।
আঁশওয়ালা মাছ যদি কোন প্রকার নাপাক বা ক্ষতিকর কিছু খেয়ে থাকে তাহলে তাদের পাকস্থলী হজমের সময় এসব বস্তুকে পরিপূর্ণভাবে ভিন্ন বস্তুতে রূপান্তরিত করে এর থেকে খাদ্য উপাদান সমূহকে আলাদা আলাদা করতে সক্ষম , যার ফলে এ ধরনের মাছের রক্ত ও মাংসে এসব নাপাক বা ক্ষতিকর বস্তু মেশে না ।

পক্ষান্তরে আঁশবিহীন মাছ নাপাক ও ক্ষতিকর কোন কিছু খেলে তাদের পাকস্থলী এসব নাপাক ও ক্ষতিকর বস্তুগুলোকে অনেকটা অপরিবর্তিত অবস্থায় এদের রক্ত ও মাংসে মিশিয়ে দেয় , যার ফলে মানুষ এসব মাছ খেলে মানুষের শরীরে সরাসরি এসব নাপাক ও ক্ষতিকর বস্তুগুলো ঢুকে যায় ।

৬)- মাছে বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাঙ্গর, সোর্ডফিশ, টুনাসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছে অতিরিক্ত মাত্রায় পারদসহ অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে, যা দেহের জন্য ক্ষতিকর।

৭)- নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সামুদ্রিক ও স্বাদুপানির মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এ বিষয়ে গবেষক নরম্যান হর্ড জানান, এই বিশেষ ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রদাহবিরোধী ধর্ম রয়েছে। আর এ কারণে হার্টের স্বাস্থ্য ও প্রদাহজনিত সমস্যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উপকারী। কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থা পাল্টে যেতে পারে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে শরীর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে, হতে পারে রোগ সংক্রমণ। ওই গবেষক বলেন, অতিরিক্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পাল্টে যায়, যা জীবাণুর সঙ্গে শরীরের লড়াই করার ক্ষমতার ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে।

১৪০০ বছর পূর্বে আঁশবিহীন মাছ খাওয়ার ব্যাপারে এই জাতীয় নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমরা বনু সকীফার মুসলমানগন অবলীলাক্রমে আঁশবিহীন মাছ বেশ মজা করে ভক্ষন করে চলেছি ।
রাসুল (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বায়েতের বারজন ইমাম (আঃ) গন ১৪০০ বছর আগে নিষেধ করার পরও মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর আঁশবিহীন মাছ খাওয়ার লোভ সংবরন করতে পারছি না ।

পাঠক ,
এবারে আরও দেখে নিন , খ্রীষ্টানদের বাইবেল কি বলে –

” — সমুদ্রে বা নদীর জলের অভ্যন্তরে বিচরনশীল যে কোন মাছ , যে মাছগুলোর আঁশ আছে , সে মাছগুলো তুমি ভক্ষন করতে পার । কিন্ত সমুদ্রে ও নদীর জলের অভ্যন্তরে থাকা পরীক্ষার অনুপযোগী যে মাছগুলোর আঁশ নেই সে মাছগুলো তুমি কখনই খাবে না । আঁশবিহীন মাছ যে মাছগুলি পরীক্ষার অনুপযোগী ও অস্বাস্থ্যকর সে মাছগুলি তোমার খাওয়া ঠিক নয় এবং আঁশবিহীন সে সমস্ত মাছের মাংস খাওয়া ঠিক নয় — “।(১১ঃ ৯ – ১২ , বাইবেল)

এ ছাড়া বিশ্বের অনেক দেশেই প্রক্রিয়াজাত মাছ বিক্রি করা হয়। এই প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ক্রুটির কারণে মাছ খাওয়া দেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সামুদ্রিক ও স্বাদুপানির মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে পারেন। এ বিষয়ে গবেষক নরম্যান হর্ড জানান, এই বিশেষ ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রদাহবিরোধী ধর্ম রয়েছে। আর এ কারণে হার্টের স্বাস্থ্য ও প্রদাহজনিত সমস্যায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উপকারী। কিন্তু তা সত্ত্বেও এটি অতিরিক্ত খেলে শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থা পাল্টে যেতে পারে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে শরীর ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে, হতে পারে রোগ সংক্রমণ। ওই গবেষক বলেন, অতিরিক্ত ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পাল্টে যায়, যা জীবাণুর সঙ্গে শরীরের লড়াই করার ক্ষমতার ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে।

সুতরাং আসুন যে প্রকারের মাছগুলোকে ইসলাম ধর্মে খেতে নিষেধ করা  হয়েছে সেগুলো খাওয়া থেকে আমরা নিজেদেরকে বিরত রাখি। কেননা ইসলাম হচ্ছে একটি ঐশি ও আদর্শ ধর্ম।