ইমাম আলীর (আ.)সাথে ইবনে মুলযামের প্রথম সাক্ষাতের ঘটনা সত্যিই বিশ্ময়কর ছিল।কেননা সেদিন সে নিজেই জানতো না তার ভবিষ্যত পরিণতি কি হবে ? পবিত্র কুরআনের র্নিদেশনা অনুযায়ী প্রতিটি মানুষই চরম পতনের তীরপ্রান্ত দিয়ে পথ হেটে চলছে যেকোন মুর্হুতেই তার সামান্য অসাবধনতার ফলে গুমরাহী ও বিচ্যুতির অসীম গুহায় নিপাতিত হতে পারে। ইতিহাসে আমরা এমন অনেক মানুষের সাক্ষাত পাই যারা প্রথম জীবনে ছিলেন চরম গুমরাহীতে অথচ তাদের শেষ পরিণতি ছিল কল্যাণকর।
আবার এমন অনেক মানুষের সাক্ষাত পাই যাদের প্রথম জীবন ছিল পবত্রি ও সততায়পূর্ণ অথচ শেষ পরিণতি হল অত্যন্ত ভয়নক ও নিকৃষ্ট। এরকম ব্যক্তিদের একজন হল ইবনে মুলযাম ।
কাহিনীর সারসংক্ষেপ হল ইবনে মুলজাম ইয়ামেন থেকে বাইয়াতের লক্ষ্যে ইমাম আলী (আ.)-এর সান্নিধ্যে আসেন। ইয়ামেনের বৃহত্তর জনগোষ্ঠি থেকে তাকে বেছে নেয়ার ঘটনাটিও বিষ্ময়কর। অতএব আপনি যে স্তরের মানুষ হোন না কেন প্রতিটি মুর্হুতে আপনার পদস্খলনের সম্ভবনা রয়েছে। আর এই পদস্খলন থেকে একমাত্র রক্ষার উপায় হল বিচক্ষণাদীপ্ত মজবুত ঈমান ও আমলে সালেহ।
তবে কেন এবং কি কারণে মানুষের শেষ পরিণতি নিকৃষ্ট হয় তা বিশ্লেষনের জন্য আরেকটি প্রবন্ধের প্রয়োজন। বর্তমান কাহিনীটি আল্লামা মাজলীসি,বিহারুল আনোয়ার গ্রন্থের ৪২ তম খন্ডের২৫৯ নম্বর পাতা বর্ণনা করেছেন।
লুত বিন ইয়াহিয়া থেকে আবুল হাসান আলী ইবনে আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আল বুকরা বর্ণনা করেন: তৃতীয় খলিফা ওসমান নিহত হওয়ার পর জনগণ যখন ইমাম আলী(আ.)এর হাতে বাইয়াত করলেন তখন হাবিব বিন মুনতাজির নামক জনৈক ব্যক্তি তৃতীয় খলিফার পক্ষ থেকে ইয়ামেনের কোন এক শহরের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ইমাম আলী(আ.)তাকে নিজ অবস্থানে বহাল থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য একটি পত্র লেখেন। পত্রটি হল নিন্মরূপ :
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আল্লাহর দাস, আমিরুল মোমেনীন আলী ইবনে আবি তালিবের পক্ষ থেকে হাবীব বিন মুনতাজবিকে,
সালামুন আলাইকুম,
সমস্ত প্রসংশ ঐ প্রভুর যিনি ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই।এবং আল্লাহর রাসুল ও তার আহলে বাইতের প্রতি দরুদ । অতপর পূর্বে আপনি যাদের উপর র্কতৃত্ব করতেন সে অবস্থানেই আপনাকে বহাল রাখলাম, আপনি আপনার কাজ অব্যহত রাখেন।
আমি আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি জনগণে মাঝে ন্যায় সঙ্গত আচারণ করুন এবং তাদেরকে দয়ার দৃষ্টিতে দেখুন। আর জেনে রাখুন ! মুসলিম উম্মার উপর কেউ কর্তৃত্ব লাভ করলে যদি ন্যায় সঙ্গত আচারন না করে তাহলে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় তাদেরকে হাশরের ময়দানে উপস্থিত করা হবে যখন তাদের হস্তদ্বয় গৃবাতে বাঁধা থাকবে।
র্পাথিব জীবনে ন্যায়পরায়ণ আচারণ ব্যতীত তাকে কোন কিছুই ঐ বন্ধন মুক্ত করতে পারবে না।সুতরাং এবিষয়গুলো ইয়ামেনের জনগনের নিকট পাঠ করুন এবং তাদের থেকে বাইয়াত গ্রহণ করুন। জনগণ স্বত:র্স্ফূতভাবে আপনার কাছে বাইয়াত করলে আপনিও ভালভাবে কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
: “و اَنفِذ اِلیّ مِنهُم عَشرَۀ یَکونُونَ مِِن عُقلائِهِم وَ فُصحائِهِم وَ ثِقَاتِهِم، مِمَّن یَکُونُ اَشَدُّهُم عَونَاً مِن اَهلِ الفَهمِ وَ الشُّجاعَۀِ عارِفینَ بالله، عالِمینَ بِاَدیانِهِم وَ مالَهُم وَ ما عَلَیهِم وَ اَجودُهم رأیاً، وَ عَلَیکَ وَ عَلَیهِمُ السّلام
ইয়ামেনেরে জনগনের মধ্য থেকে আমি যে বৈশিষ্টগুলো উল্লখে করছি তার উপর ভিত্তি করে ১০ জনকে বেছে আমার কাছে প্রেরণ করুন, বিচেক্ষণ, স্পষ্টভাষী (ভাল বক্তা) ও জনগনের বিশ্বস্ত এবং যারা জনগনের সেবা করতে সুদৃঢ়, সাহসী, খোদা পরিচিতি ও ধর্মীয় জ্ঞানের অধিকারী, নিজের অধিকার ও দায়-দায়িত্ব সর্ম্পকে অবগত ও সুচিন্তিত মতামতরে অধিকারী।এমন দশজনকে বেছে আমার কাছে পাঠান।
[ইমাম ব্যক্তি নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি গুরুতারোপ করেছেন যথাক্রমে: (১) বুদ্ধিবৃত্তি বা আকল (২) ভালবক্তা (৩) জনগনের বিশ্বস্ত (৪) জনসেবায় সুদৃঢ় (৫) বিচক্ষণ ও বুঝদার লোক (৬) সাহসী (৭) খোদা পরিচিতির অধিকারী (৮) র্ধমীয় বিষয়ে জ্ঞানী (৯) নিজের ও জনগনের অধিকার সর্ম্পকে সচতেন (১০) যাদের মতামত ও পরার্মশ কল্যাণকর।
সত্যিকারই কমোর ভাঙ্গা সব বৈশিষ্ট্য যারতার মধ্যে পাওয়া সম্ভব নয়। অতএব নিশ্চিত ভাবে বলা যায় ঐসব বৈশিষ্ট্যের মানুষেরা হবনে ব্যতিক্রমধর্মী লোক।]
ইমাম আলী (আ.) চিঠিটি মহর করে হাবীবের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। হাবীব চিঠিটি পেয়ে চুম্মুন করে চোখে ও মাথার উপর তুলে নিলেন।
হাবীব চিঠিটি পড়ার পর মিম্বারে উঠলেন এবং আল্লাহ প্রসংশা ও মুহাম্মদ ও তার পরিবারের প্রতি দরুদ পাঠ করে বললেন : হে লোকসকল! ওসমান তার দায়িত্ব পালন করে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে জনগন তার পর আল্লাহর বান্দা, কল্যাণকামী নেতা, রাসুলের (স.) ভাইকে খলিফা হিসেবে মেনে নিয়েছেন । অতএব বর্তমান খলিফা হলেন খেলাফাতের জন্য সর্বাধিক উপযুক্ত ব্যক্তি রাসুলের চাচাতো ভাই, রাসুলের কন্যার জামাই, হাসান ও হোসেনের পিতা আমিরুল মোমনেীন আলী ইবনে আবি তালিব। তার কাছে বাইয়াত করার ক্ষেত্র্রে তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গী কি ?
রাবী বর্ণনা করছেন: («قالَ: فضجّ النّاسُ بِالبُکاءِ وَ النَّحیبِ، وَ قالُوا: سَمعاً وَ طَاعَۀً وَ حُبَّاً وَ کَرامَۀً لله وَ لِرَسولِهِ وَ ِلأخی رَسُولِه، فَاَخَذَ لَهُ البَیعَۀُ عَلَیهِم عَامَۀ؛)
হাবীবের কথা শেষ না হতেই জনগন আবেগে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো এবং বলতে লাগলো, আমারা আপদমস্তক তার কাছে অবনত, সে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের প্রেমিক এবং রাসুলের ভাই। তখন হাবীব সবার থেকে বাইয়াত গ্রহন করলেন।
فَاختارَ مِنهُم مأۀ ثُمَّ مِنَ المِأۀِ سَبعینَ، ثُمَّ مِنَ السَّبعین ثَلاثینَ، ثُمَّ مِنَ الثَّلاثینَ عَشرَۀً فیهِم عَبدَ الرَّحمنِ بنِ مُلجَمِ المُرادی
বাইয়াত গ্রহণ শেষে বললেন আমি তোমাদের মধ্য থেকে ১০ জন সাহসী ও শ্রেষ্ঠ লোককে আলীর (আ.)কাছে পাঠাতে চাই।অবশ্য তিনিই এমনটি চেয়েছেন। সবাই এক বাক্যে বললেন ঠিক এ্টাই আমরা করবো।
অতপর তারা তাদের মধ্য থেকে ১০০জন বেছে নিলেন, তারপর ১০০ জন থেকে ৭০ জনকে তারপর ৭০ জনথেকে ১০ জনকে আর এই দশ জনের মধ্যে একজন ছিলেন আব্দুর রহমান ইবনে মুলযাম।
দশজন মনোনীত হওয়ার সাথে সাথেই ইমাম আলী (আ.)এর কৃতজ্ঞতা ও সহযোগীতার বার্তা পৌছানোর জন্য তাদেরকে কুফায় পাঠানো হল।তারা কুফাতে পৌছায়েই ইমাম আলী (আ.)এর সন্নিধ্যে উপস্থিত হয়ে তাঁকে সালাম ও খলিফা হিসেবে সম্ভাষণ জানালেন।
ইমাম আলী (আ.) ও তাদের সালামের উত্তর দিয়ে স্বাগত জানালেন। অতপর [যেহেতু আগে থেকেই ইবন মুলযামকে এই দলের মুখপাত্র হিসাবে মনোনীত করা হয়েছিল] ইবনে মুলযাম সম্মুখে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলা শুরু করলো :
«فَتَقَدَّمَ ابْنُ مُلْجَمٍ وَ قَامَ بَیْنَ یَدَیْهِ وَ قَالَ: السَّلَامُ عَلَیْکَ أَیُّهَا الْإِمَامُ الْعَادِلُ وَ الْبَدْرُ التَّمَامُ وَ اللَّیْثُ الْهُمَامُ وَ الْبَطَلُ الضِّرْغَامُ وَ الْفَارِسُ الْقَمْقَامُ وَ مَنْ فَضَّلَهُ اللَّهُ عَلَى سَائِرِ الْأَنَامِ صَلَّى اللَّهُ عَلَیْکَ وَ عَلَى آلِکَ الْکِرَامِ أَشْهَدُ أَنَّکَ أَمِیرُ الْمُؤْمِنِینَ صِدْقاً وَ حَقّاً؛
হে ন্যায়পরায়ন নেতা আপনার প্রতি সালাম!হে র্পূনীমার চাঁদ, হে সাহসী বীর, যুদ্ধের ময়দানের একক অশ্বারোহী, যাকে মহান আল্লাহ সকল ফজিলত দিয়েছেন (নবুয়াত ব্যতীত)! আপনার প্রতি দরুদ এবং আপনার মহান পরিবার পরিজনের প্রতি।আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আপনি সকল মোমীনদের অভিভাবক…..।
তার বক্তব্যের ধরণ দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যায় যে সে সাহস, মেধা, দক্ষবক্তা, অদ্ভুত এক ব্যক্তিত্ব।অতপর ইবনে মুলযাম বললেন :
أَنَّکَ وَصِیُّ رَسُولِ اللَّهِ صلی الله علیه و آله وَ الْخَلِیفَةُ مِنْ بَعْدِهِ وَ وَارِثُ عِلْمِهِ لَعَنَ اللَّهُ مَنْ جَحَدَ حَقَّکَ وَ مَقَامَکَ أَصْبَحْتَ أَمِیرَهَا وَ عَمِیدَهَا لَقَدِ اشْتَهَرَ بَیْنَ الْبَرِیَّةِ عَدْلُکَ وَ هَطَلَتْ شَآبِیبُ فَضْلِکَ وَ سَحَائِبُ رَحْمَتِکَ وَ رَأْفَتِکَ عَلَیْهِمْ وَ لَقَدْ أَنْهَضَنَا الْأَمِیرُ إِلَیْکَ فَسُرِرْنَا بِالْقُدُومِ عَلَیْکَ فَبُورِکْتَ بِهَذِهِ الطَّلْعَةِ الْمَرْضِیَّةِ وَ هُنِّئْتَ بِالْخِلَافَةِ فِی الرَّعِیَّةِ؛
নিশ্চয় আপনিই রাসুলের (স.) উত্তরসূরী ও তার পরবর্তি খলিফা [ না যারা আপনার পূর্বে খেলাফাতকে জব্দদখল করেছিল] এবং তাঁর জ্ঞানের ওয়ারিস (উত্তরসূরী)। আল্লাহর অভিশাপ ঐসব ব্যক্তিদের প্রতি যারা আপনার অধিকার, মাকাম ও শ্রেষ্ঠত্বকে অস্বীকার করে …..।
ইমাম আলী (আ.) ইয়ামেন থেকে আগত ইবনে মুলযাম ও বাকীদের দিকে তাকিয়ে তাদেরকে নিজের কাছে ডাকলেন।তারা যখন কাছে আসলেন, তাদের প্রতিনিধির প্রত্রটি ইমামের হাতে দিলেন। ইমাম পত্রটি খুলে পড়েই খুশী হয়েগেলেন।অতপর তিনি আদেশ দিলেন তাদের প্রত্যেককে একসেট ইয়ামেনী পোশাক, আবা এবং একটি করে এ্যারাবিয়ান ঘোড়া প্রদান করে সম্মান হোক।
ইবনে মুলযাম যখন এমন মহানুভবতা প্র্রত্যক্ষ করলেন তখন আবার ইমাম আলী (আ.)-এর প্রসংশায় কবিতা পাঠ শুরু করে দিলেন।
اَنتَ المُهَیمِنُ وَ المُهَذَّبُ ذُو النَّدی
وَ اِبنَ الضَّراغِمِ فی الطراز الاَوّل
اللهُ خَصَّکَ یا وَصِیُّ مُحمَّد
وَ حَباکَ فَضلاً فِی الکِتابِ المُنَزَّل
وَ حَباکَ بِالزَّهراءِ بِنتَ مُحَمَّد
حُورِیۀٍ بِنتِ النَّبیِّ المُرسَل
তুমি পবিত্র, মহানব্যক্তি, দানশীল,বিরপুরুষ, মহান আল্লাহই আপনাকে রাসুলের (স.) উত্তরসুরী হিসেবে মনোনীত করেছেন।আর আপনাকে যে ফজিলত দেয়া হয়েছে তা কুরআনে নাযিল হয়েছে। মানবরূপ হুর রাসুলের কন্যা হযরত জাহরা (সালামুল্লাহ আইলা্হা)-কে আপনার সহর্ধামিনী করে ধন্য করেছেন।
راوی میگوید: «فَاسْتَحْسَنَ أَمِیرُ الْمُؤْمِنِینَ علیه السلام کَلَامَهُ مِنْ بَیْنِ الْوَفْدِ فَقَالَ: لَهُ مَا اسْمُکَ یَا غُلَامُ؟ قَالَ اسْمِی عَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَ ابْنُ مَنْ قَالَ ابْنُ مُلْجَمٍ الْمُرَادِیِّ قَالَ لَهُ أَ مُرَادِیٌّ أَنْتَ قَالَ نَعَمْ یَا أَمِیرَ الْمُؤْمِنِینَ؛
রাবী বর্ণনা করেন : ইমাম আলী (আ.) তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জিঙ্গাসা করলেন হে যুবক তোমার নাম কি ? সে বলল : আব্দুর রহমান। তিনি আবার বললেন : তোমার বাবার নাম কি ? সে বলল : ইবনে মুলযাম মুরাদী। তিনি বললেন : তুমি সত্যিই কি মুরাদীর সন্তান !? সে বলল : জী! আমিরুল মোমেনীন। অতপর ইমাম বললেন : ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্না ইলাইহির রাজেউন, ওয়া লা হাওলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম।
আসবাগা বিন নাবাতার বর্ণনায় এসেছে যে, ইবনে মুলযাম বাইয়াত করে ফিরে চলে যাওয়ার সময় তাকে ইমাম পুরায় ডাকেন বাইয়াত করার জন্য। বাইয়াত আবার চলে যাওয়ার পরপর তাকে পুনরায় ডাকা হয়। তখন ইবনে মুলযাম বললো : হে আমিরুল মুমেনীন আমার সাথে যে আচারণ করছেন সেভাবে তো বাকীদের সাথে করা হচ্ছে না, এর কারণ কি ? ইমাম বললেন : সবধান থেকো যেন তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা (বাইয়াত)ভঙ্গ করনা। তখন ইবনে মুলযাম বললেন:
وَ إِنِّی وَ اللَّهِ لَأُحِبُ الْإِقَامَةَ مَعَکَ وَ الْجِهَادَ بَیْنَ یَدَیْکَ وَ إِنَّ قَلْبِی مُحِبٌّ لَکَ وَ إِنِّی وَ اللَّهِ أُوَالِی وَلِیَّکَ وَ أُعَادِی عَدُوَّکَ؛
খোদার শপথ করে বলছি আমি আপনাকে অত্যন্ত ভালবাসি, আমি আপনার সাথেই আছি, আপনার সাথে থেকেই জিহাদ করতে চাই।খোদার শপথ আমি আপনার বন্ধুদেরকেও ভালবাসি আর শত্রুদের সাথে শত্রুতা করি।
সেদিন সত্যিই হয়ত ইবনে মুলযামের কথাই সত্য ছিল।কিন্তু সময়ের আর্বতনে এই ইবনে মুলযাম আমিরুল মোমেনীন আলী (আ.) খুনীতে পরিণত হয়েছে।
কারবালার ময়দানে ইমাম হোসেন (আ.)এর পবিত্র মস্তক বিচ্ছিন্নকারী অভিশপ্ত শীমার । সিফ্ফিনের যুদ্ধে ঐ শীমার ইমাম (আ.)এর পক্ষ হয়ে মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে আর কারবালার ময়দানে তার ভুমিকা দেখুন!
অতএব বহু শীমার বহু ইবনে মুলযাম আমাদের মধ্যেই লুকিয়ে আছে। এযুগের শীমার তারাই যারা সৎ ও ভাল কাজে বাঁধা প্রদান করে। ন্যায় কাজ থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়। যারা মিথ্যা গুজব তৈরী করে র্ধমীয় ব্যক্তিত্বদের ব্যক্তিত্বকে হত্যা করে।
অতএব সবধান বন্ধুগণ ! দাবীদার ভাল মানুষে আজ দেশ সয়লাব। তাই নিজেকে সবসময়ই বিচক্ষণতার সাথে বাস্তবতার সাথে মিলায়ে নিতে হবে। কেননা, মহান আল্লাহ বলেছেন, নি:শ্চয় প্রতিটি মানুষ পতনের মধ্যে নিপাতিত একমাত্র বিচক্ষণতা সম্পন্ন মজবুত ঈমান ও আমলে সালেহ ব্যাতীত।
এই পতনমুখী অতি চিকন পথ বেয়ে আমরা প্রত্যেকেই চেলেছি। আবেদ, আলেম, দরবেশ, জ্ঞানীগুনী সবাই ঐ পতনের পথ বেয়ে পথ চলেছেন। অতএব প্রতিটি ক্ষেত্রে সাবধনতার বিকল্প অন্যকিছু কিছু নেই। তাই আসুন কুরআন ভিত্তিক জীবন চর্চা করি।