এস, এ, এ
হাজ্জাজ বিন মাসরুকের বংশ
জাআফ বিন যাম জিম এবং সোকুন আইন মাহমালাহ সাদ আল-আশিরা গোত্রের একটি প্রজন্ম। (আল ইরশাদ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৭৮)
হাজ্জাজ বিন মাসরূক (শেখ মুফিদ মাসরূকের পরিবর্তে মাসরূর লিপিবদ্ধ করেছেন)। (আল ইরশাদ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৭৮)
হাজ্জাজ বিন মাসরূক, হাজ্জাজ বিন সারদাক্ব, হাজ্জাজ বিন মারযুক্ব ও বলা হতো এবং জাআফি শব্দটি জাআফি বিন সাআদ যিনি “মাযজাহ” (ইয়েমেন এবং দক্ষিণ আরবের একটি গোত্র) গোত্রের একটি প্রজন্ম ছিলেন। তার নাম তারিখে তাবারি যিয়ারতে নাহিয়া এবং বিহারুল আনওয়ারে বর্ণিত হয়েছে। খাওয়ারাযমি ও তার নাম উল্লেখ করেছন।
আলীর প্রিয় প্রেমিক ও কারবালার শহীদ হাজ্জাজ বিন মাসরুক জাআফি মাজহাজী
ইমাম হুসাইন (আ.)এর যিয়ারত এবং যিয়ারত-এ নাহিয়াতে বর্ণিত হয়েছে:
السَّلَامُ عَلَی الْحَجَّاجِ بْنِ مَسْرُوقِ الْجُعْفی
হাজ্জাজ বিন মাসরুক ছিলেন একনিষ্ঠ শিয়া
হাজ্জাজ যিনি মাসরুক জাআফি’র সন্তান, মাযজাহ গোত্রের একজন এবং আমিরুল মুমিনিন আলি (আ.)এর একনিষ্ঠ শিয়া ছিলেন। তিনি কুফায় বসবাস করতেন এবং হযরত আলি (আ.)এর সঙ্গিদের একজন ছিলেন। তিনি কুফায় আমিরুল মুমিনিন আলি (আ.)এর সঙ্গি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
হাজ্জাজ যিনি মাসরুক জাআফি যিনি ইমাম হুসাইন (আ.)এর সেনাবাহিনীর মোয়াজ্জিন ছিলেন এবং কিছু জনের মতে তিনি ইমাম হুসাইন (আ.)এর ঘোড়ার রেকাবধারী ছিলেন। তিনি একাধারে অনেক নামাজ পড়তেন, রোযা রাখতেন, কোরআনের ক্বারি এবং কোরআনের হাফেয ছিলেন।
ইমাম হুসাইন (আ.)এর সান্নিধ্য লাভ
হাজ্জাজ যিনি মাসরুক যখন কারবালার পথে ইমাম হুসাইন (আ.)এর যাত্রার খবর পায় সে ইমামকে স্বাগতম জানানোর জন্য কুফা থেকে বাহির হয়ে মক্কার দিকে রওনা হয় এবং পথিমধ্যে ইমামের সাথে যোগদান করে। (আবসারুল আইন, পৃষ্ঠা ১৫১)
ইমাম হুসাইন (আ.)এর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব
ইমাম হুসাইন (আ.) যখন “আযিবুল হাজানাত” থেকে যাত্র করে “ক্বুতফুতানিয়া” নামক স্থানে পৌঁছায়। ইমাম যখন “ক্বাসরে বণি মাক্বাতেল” নামক স্থানে পৌঁছান যা কারবালা পৌঁছানোর বিশতম যাত্রাবিরতিস্থল সেখানে তিনি তাবু প্রতিস্থাপন করতে বলেন এবং জিজ্ঞাসা করেন এই জায়গাটির মালিক কে? উত্তরে বলা হলো আব্দুল্লাহ বিন হুর জাআফি’র জায়গা। যিনি একজন উসমানি মতাদর্শের অনুসারী এবং সিফফিনের যুদ্ধে মাবিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশহগ্রহণ করেছিল এবং আমিরুল মুমিনিন আলি (আ.)এর শাহাদতের পরে কুফায় বসবাস করছে। (ওয়াসিলাতুদ দারাইন, পৃষ্ঠা ৬৭)
ইমাম হুসাইন (আ.) হাজ্জাজ বিন মাসরুককে নির্দেশ দেন যে সে যেন আব্দুল্লাহ বিন হুর জাআফিকে উক্ত কাফেলায় তাদের সফর সঙ্গি হওয়ার আহবান জানায়। হাজ্জাজ আব্দুল্লাহ’র তাবুতে প্রবেশ করে সামান্য কুশল বিনিময়ের পরে আব্দুল্লাহ জিজ্ঞাসা করে হাজ্জাজকে আর কি খবর? হাজ্জাজ বলে: তোমার জন্য একটি অতিব দামী উপহার নিয়ে এসেছি, তুমি যদি কবুল কর তাহলে সেটা তোমার! ইমাম হুসাইন (আ.) তোমাকে তাঁর সাহায্যর জন্য ডেকেছেন, তুমি যদি তাঁর শত্রুদের হত্যা কর তাহলে সেটা তুমি পাবে আর তুমি যদি মারা যাও কর তাহলে শাহাদতের মর্যাদা অর্জন করবে। তখন আব্দুল্লাহ বলে আল্লাহর শপথ আমি কুফা থেকে এইজন্যই বাহির হয়েছি কারণ আমি দেখেছি তাঁর সাথে যুদ্ধ করার জন্য অনেকেই প্রস্তুত হয়েছে এবং তাঁর শিয়ারা অপমান অপদস্থ হয়েছে, তারপরে শুনলাম যে তাঁকে হত্যা করা হবেএমতাবস্থায় আমি তাঁকে সাহায্য করতে পারব না আর আমি চাই না যে তাঁর সাথে যেন আমার দেখা হোক। (মাকাতেলে হুসাইন মোকাররম, পৃষ্ঠা ২২৪)
খাযায়েনাতিল আরাবিল কুবরা নামক গ্রন্থের লেখক লিছেন: ইমাম হুসাইন (আ.) যখন কাসরে মাকাতিল নামক স্থানে পৌছায় তখন তিনি দেখেন যে সেখানে আগে থেকেই তাবু রয়েছে। ইমাম জিজ্ঞাসা করেন: এই তাবুটি কার? লোকজন বলে উবাইদুল্লাহ বিন হুর জাআফি’র তাবু, তখন হাজ্জাজ বিন মাসরুক জাআফি এবং ইয়াযিদ বিন মাগ্বফাল জাআফিকে পাঠান এবং তাকে ইমামের দাওয়াত দেয়। তারা তাবুর ভিতরে যায় এবং উবাইদুল্লাহকে বলে: ইমাম তোমাকে ডেকেছেন। উবাইদুল্লাহ বলে: ইমাম হুসাইন (আ.)কে বলবে আমি যে কারণে কুফার থেকে পালিয়ে এসেছি তা হচ্ছে আমি জানতে পেরেছি যে তোমরা কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছ এবং আমি তোমদের রক্তে নিজের হাতকে রঞ্জিত করতে চাই না এবং আমি বলেছি: ইমাম হুসাইনের সাথে যুদ্ধ করা হবে চরম পাপের কাজ, আমি যদি তার রক্ষার্থে নিজেকে বিসর্জন না দেই তাহলে তাঁর মর্যাদা অক্ষুন্ন থাকবে না এবং আমি চাই না যে আমার মৃত্যুর পরে কেউ যেন আমার উপরে আধিপত্য বিস্তার করে এবং আমি অপমান অপদস্থ হই। কুফাতে ইমাম হুসাইন (আ.)এর এমন কেন শিয়া বা সঙ্গী নাই যারা ইমামের পক্ষে থেকে যুদ্ধ করবে। হাজ্জাজ এবং ইয়াযিদ উবাইদুল্লাহর বার্তা ইমামের কাছে পৌছে দেয়। ইমাম তার কথা শুনে দুঃখভারাক্রান্ত স্বরে বললেন: আমার জুতা নিয়ে আস। ইমাম পায়ে হেটে উবাইদুল্লাহর তাবুতে যান। উবাইদুল্লাহ ইমামকে স্বাতগম জানায় এবং তাঁকে বৈঠকের প্রধান স্থানে বসতে দেয়।
ইয়াযিদ বিন মাররা বলেন: উবাইদুল্লাহ আমাকে বলেছিল: ইমাম হুসাইন (আ.) যখন আমার কাছে আসে তখন তার দাড়ি চুলের ন্যায় পরিপাটি ছিল। আমি কাউকে তার মতো এত সুন্দর দেখিনি যে এক দেখাতেই দর্শককে মুগ্ধ করে দিবে এবং কখনও কারো জন্য এমন অনুভূতি উপলব্ধি করিনি। তিনি যখন আসলেন তখন তার সাথে ছোট শিশু ছিল। তিনি বললেন: তুমি কেন আমার সাথে কিয়াম করার বিষয়ে সংকোচ করছ কেন তুমি আমার পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছ না? উবাইদুল্লাহ বলে: আমি যদি দুই দলের মধ্যে এক দলের পক্ষপাতিত্ব করি তাহলে আমি আপনার দলে অংশহগ্রহণ করব এবং আপনার শত্রুদের জন্য চরম পতিরোধ গড়ে তুলব। কিন্তু আমি চাই যে আপনি যেন আমাকে এই ক্ষেত্রে ক্ষমা করেন। তবে আমার এই বাহন এবং সঙ্গিরা আপনার সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছে, আমার এই দ্রুতগামী আমি আপনাকে দিতে চাই যেন আপনি সহজেই আপানার আশ্রয়স্থলে পৌঁছে যান এবং আপনার পরিবার পরিজনকে আপনার কাছে পৌঁছান পর্যন্ত রক্ষা করব এজন্য যদি আমার জীবনও চলে যায় তাতেও কোন দ্বিধা করব না আর আমি ওয়াদা করলে তা অবশ্যই পূরণ করি।
ইমাম হুসাইন (আ.) বলেন: তোমার দ্রুতগামী ঘোড়ার কোন প্রয়োজন আমার নাই, আমি শুধু তোমাকে নসিহত করতে চাই: হে হুরের সন্তান! কেউ যদি আমার ক্রন্দন এবং আহাজারির শব্দ শোনার পরে সামর্থ থাকার পরেও আমার সাহায্য না করে তাহলে আল্লাহর শপথ করে বলছি যে কেয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে। তিনি এই কথাটি বলেই চলে গেলেন।
রেওয়ায়েত বর্ণনাকারী বলে: ইমাম হুসাইন (আ.) যখন তার তাবুর বাহিরে চলে গেলেন তিনি একটি পশম (রেশম) চাদর এবং রাতে একটি মাটি রংয়ের টুপি পরতেন এবং হাজ্জাজ এবং ইয়াযীদ জাআফী আবি আব্দুল্লাহ আল-হুসাইন (আ.)এর শিশুদের সাথে ছিলেন। উবাইদুল্লাহ বলেন: আমি ইমামকে বিদায় দেওয়ার জন্য উঠলাম এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম: আপনার মুখ কালো দেখাচ্ছে নাকি আপনি রং করেছেন? তিনি বললেনঃ হে হুরের সন্তান! তাড়াতাড়ি বার্ধক্যে উপনীত হচ্ছি। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে তিনি খেযাব করেছেন এবং তাকে বিদায় দিলাম।
শাইখ আবদ আল-কাদির বিন উমর আল-বাগদাদি [খাযায়েনাতিল আদাব, পৃ ২২৯-তে উদ্ধৃত] লিখেছেন: আবি আবদুল্লাহ (আ.) এর প্রস্থানের পর, ইবনে জাআফি তাকে সাহায্য না করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, এবং যখন ইবনে যিয়াদকে হত্যা করা হয়, তখন তিনি আবি আবদুল্লাহ আল-হুসাইন (আ.)-এর বিলাপের মধ্যে এই বর্ণনাটি লিখেছিলেন:
— فیا لک حسرة مادمت حیا تردد بین صدری و التراقی حسین حین یطلب بذل نصری علی أهل العداوة و الشقاق و لو انی أواسیه بنفسی لنلت کرامة یوم التلاق مع ابن المصطفی روحی فداه فیا لله من ألم الفراق فما أنسی غداة یقول حزنا أتترکنی و تزمع لانطلاق فلو فلق التلهف قلبی لهم القلب منی بانفلاق فقد فاز الألی نصروا حسینا و خاب الآخرون أولو النفاق
এবং “দুররুন নাযিম” গ্রন্থে তিনি লিখেছেন যে তিনি বনী মাকাতিল প্রাসাদে এসে ক্রন্দন করেন এবং উল্লেখিত মার্সিয়া ছাড়াও এই মার্সিয়াটি পাঠ করলেন:
یقول أمیر غادر و ابن غادر ألا کنت قاتلت الشهید ابن فاطمه و نفسی علی خذلانه و اعتزاله و بیعة هذا الناکث العهد لائمه فیا ندمی أن لا أکون نصرته ألا کل نفس لا تسدد نادمه و انی لأنی لم أکن من حماته لذی حسرة ما ان تفارق لازمه سقی الله أرواح الذین تأزروا علی نصره سقیا من الغیث دائمه وقفت علی أجداثهم و محالهم فکاد الحشی ینفض و العین ساجمه لعمری لقد کانوا مصالیت فی الوغی سراعا الی الهیجا حماة ضیاغمه تواصوا علی نصر ابن بنت نبیهم بأسیافهم آساد غیل ضراغمه فان یقتلوا کل نفس زکیة علی الأرض قد أضحت لذلک واجمه و ما ان رأی الرائون أصبر منهم لدی الموت ساداة و زهرا قماقمه أتقتلهم ظلما و ترجو ودادنا فدع خطة لیس لنا بملائمه لعمری لقد راغمتمونا بقتلهم فکم ناقم منا علیکم و ناقمه أهم مرارا أن أسیر بجحفل الی فئة راغت عن الحق ظالمه فکفوا و الا ذدتکم فی کتائب أشد علیکم من زحوف الدیالمه.
আব্দুল্লাহ জাআফি অনেকগুলো যুদ্ধ মোসআব, মোখতার এবং আব্দুল মালেকের সাথে করেন এবং অবশেষে তার দেহ বাগদাদের সেতুতে পড়ে এবং অদৃশ্য হয়ে যায়। (তারিখে দেইনূরি, আহমাদ বিন দাউদ, উদ্ধৃত যাখিরাতুদ দারাইন, পৃষ্ঠা ২৩৮)
ইমাম হুসাইন (আ.)এর মুয়াজ্জিন
আবু আলি তার রেজাল গ্রন্থে লিখেছেন: আবু আলী তার রিজাল গ্রন্থে লিখেছেন: হাজ্জাজ বিন মাসরূক জাআফী আমীরুল মুমিনীন (আ.)এর একজন একনিষ্ঠ সঙ্গী এবং কুফার বাসিন্দা ছিলেন, যখন তিনি শুনলেন যে হুসাইন বিন আলী মদিনা ছেড়ে মক্কার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন, তিনি দ্রুত মক্কায় চলে গেলেন এবং আবি আব্দুল্লাহ (আ.) যখন নামাজ পড়াতেন তখন হাজ্জাজ মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন। (আসকালানী তার এসাবা নামক গ্রন্থে, আহমাদ বিন দাউদ দেইনূরী তার আখবারুত তেওয়াল নামক গ্রন্থে, সামাভি তার আবসারুল আয়ন এবং হায়েরি তার যাখিরাতুদ দারাইন নামক গ্রন্থে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন)।
হাজ্জাজ বিন মাসরূক সর্বদা নামাজে পড়তেন এবং ইমাম হুসাইন (আ.)এর মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৫, পৃষ্ঠা ২৫)
যোহরের সময় ইমাম হুসাইন (আ.)এর সাথে যখন হুরের সাক্ষাত হয়। ইমাম হুসাইন (আ.) তাকে যোহরের আযান দিতে বলেন এবং তিনি আযান দেন। যখন ইমাম হোসাইন (আ.) হুরের বাহিনীর সাথে মুখোমুখি হলেন তখন যোহরের নামাযের সময় ছিল ইমাম হাজ্জাজকে আযান দিতে বলেন। কারবালায় আশুরার দিন শাহাদত বরণের পূর্ব মূহুর্ত পর্যন্ত হাজ্জাজ ইমাম হুসাইন (আ.) থেকে পৃথক হননি এবং অবশেষে তিনি শাহাদত বরণ করেন। (আল ইরশাদ, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৭৮, তারিখে উমাম ওয়াল মুলুক, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪০১)
কিন্তু আশুরার দিনে; যখন দুপুরের নামাযের সময় হল, তখন আবু সামামাহ সাঈদী ইমাম হোসাইন (আ.)-কে বললেন: হে আবু আবদুল্লাহ! আপনার জন্য আমার জীবন উৎসর্গ হোক, দেখছি শত্রুর বাহিনী আপনার কাছে এসেছে। খোদার কসম, যতক্ষণ না আল্লাহর ইচ্ছায় আমি আপনার সামনে নিহত হব ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিহত হবে না। আমি ইবাদতরত অবস্থায় আমার প্রভুর সাথে সাক্ষাত করতে চাই। ইমাম (আ.) মাথা তুলে বললেন: “তুমি নামাযের কথা মনে রেখেছ, আল্লাহ যেন তোমাকে নামাজিদের সাথে তোমাকে মনে রাখবেন, হ্যাঁ!” এখন নামাজের সময়।” তারপর তিনি বললেন: “তাদেরকে আমাদের থামাতে বলুন যাতে আমরা নামাজ পড়তে পারি।”
হাসিন বিন তামিম বলে: আপনাকে নামাজ পড়তে দেওয়া হবে না!! হাবিব ইবনে মাযাহির বলেন: হে লম্বা কানের অধিকারী! তুমি কি মনে কর যে রাসুলের সন্তানদের নামাজ কবুল হবে না কিন্তু তোমার নামাজ কবুল হবে?! হাবিব ইবনে মাযাহিরের শাহাদতের পরে ইমাম হুসাইন (আ.) ভয়-ভীতির নামাজ জামাতের সাথে আদায় করেন।
আশুরার দিনে হাজ্জাজের আক্রমণ এবং শাহাদত
ইবনে শাহর আশুব এবং অন্যরা বলেছেন: যখন মহররমের ১০ তারিখ শুরু হয় এবং যুদ্ধ শুরু হয়, তখন হাজ্জাজ ইবনে মাসরুক জাআফী ইমাম হোসাইন (আ.)-এর কাছে আসেন এবং ময়দানে প্রবেশের অনুমতি চান। ইমাম তাকে অনুমতি দিলেন। (আবসারুল আয়ন, পৃ. ১৫২) আনাসের শাহাদাতের পর, হাজ্জাজ জিহাদের ময়দানে প্রবেশ করেন, এবং একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, যখন তার মুখ রক্তে রঞ্জিত হয়, তখন তিনি ইমামের কাছে ফিরে আসেন এবং বলেন:
اقدم حسینا هادیا مهدیا الیوم تلقی جدک النبیا
ثم اباک ذالندی علیا ذاک الذی نعرفه و صیا
হে হুসাইন! হে ইমাম, আপনি হেদায়েত প্রাপ্ত এবং আপনি অন্যকে পথপ্রদর্শন করছেন এবং আজকে আপনি আপনার নানা নবীর সাথে সাক্ষাত করবেন। অতঃপর আপনি আপনার পিতা আলী যিনি করুণা, অনুগ্রহ ও দয়ার অধিকারী, সেই প্রিয় ব্যাক্তিত্ব যাকে আমরা রাসূলের উত্তরসূরি ও তাঁর যথার্থ উত্তরসূরি মনে করি। (মানাকিব আল আবি তালিব, খণ্ড ৪, পৃ. ১০৩)
তখন ইমাম তাকে বললেনঃ হ্যাঁ, তোমার পরে আমিও তাদের সাথে সাক্ষাত করব। হাজ্জাজ আবার রণাঙ্গনে গেলেন এবং গৌরবময় যুদ্ধের পর শহীদ হন। (মাকতালে হুসাইন, মুকারম, পৃ. ২২৪) যিয়ারতে নাহিয়াতে বলা হয়েছে: আলী আল-হাজ্জাজ বিন মাসরুক আল-জাফির উপর শান্তি বর্ষিত হোক (السلام علی الحجاج بن مسروق الجعفی) (ইকবাল আল-আমাল, খন্ড ৩, পৃ. ৩৪৫)।
হাজ্জাজ বিন মাসরূক যখন যুগের অন্ধকারাচ্ছন্নতা এবং ইমাম (সা.)-এর দুর্দশা দেখেছিলেন, তখন তাঁর চোখে পৃথিবী অন্ধকার দেখা দেয় এবং তাঁর প্রিয় ব্যাক্তিত্ব তাঁর চোখের সামনে অপমানিত হতে দেখে, তখন তিনি নির্যাতিত ইমামের সমীপে এসে বলেন: “আমাকে অনুমতি দিন যেন আপনার ওপর আমার জীবন উৎসর্গ করার সময় এসেছে।”ইমাম অশ্রু সজল চোখে অনুমতি দিলেন। হাজ্জাজ বিষন্ন ও শুষ্ক মন নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে দিকে ফিরে এবং এই শ্লোকটি পাঠ করে:
اقدم حسینا هادیا مهدیا فالیوم تلقی جدک النبیا
ثم اباک ذالندی علیا ذاب الذی نعرفه وصیا
অতঃপর তিনি সেই সৈন্য বাহিনীকে আক্রমণ করেন এবং তার অগ্নিদগ্ধ তরবারি দিয়ে তাদের ওপরে হামলা করেন এবং মানাকিব গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী তিনি শত্রু পক্ষের পনের জন সাহসী লোক সহ পদাতিক বাহিনীর কিছুজনকে হত্যা করে।
মরহুম মুহাদ্দিস কুম্মি মুনতাহিউল আমাল নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন: হাজ্জাজ শত্রুর বাহিনী থেকে পঁচিশজন লোককে হত্যা করেছিলেন, শত্রুরা বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে সেনাবাহিনীর সৈন্যরা তার তরবারি দ্বারা ক্ষত বিক্ষত হয়ে পড়েছিল, তাই তারা কাছে এবং দূর থেকে তীর নিক্ষেপ করেছিল। অবশেষে অনেক ক্ষত এবং চরম ক্লান্তির কারণে হাজ্জাজ নিস্তেজ হয়ে গেলেন, এটি দেখে এজিদি সৈন্যরা তাকে ঘিরে ফেলল এবং তার শরীরকে তার তরবারি দিয়ে টুকরা টুকরা করে ফেলল।
ইবনে শাহর আশুব সহ অন্যান্যরা বলেছেন: আশুরার দিনে যুদ্ধ শুরু হয় তখন হাজ্জাজ মাসরুক জাআফি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর কাছে আসেন এবং ময়দানে যুদ্ধ করার অনুমতি চান এবং ইমাম তাকে অনুমতি দিলেন। (আবসারুল আয়ন, পৃ. ১৫২)
আনাসের শাহাদাতের পর হাজ্জাজ জিহাদের ময়দানে যুদ্ধ করতে যায় এবং একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর, যখন সে ইমামের কাছে ফিরে আসে তখন তার মখমন্ডল রক্তে রঞ্জিত ছিল তিনি আবার রণাঙ্গনে গেলেন এবং গৌরবময় যুদ্ধের করার পর শহীদ হন। (মাকতালুল হুসাইন, মোকাররম, পৃষ্ঠা ২২৪)
যিয়ারতে নাহিয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে: সালাম আলী আল-হাজ্জাজ বিন মাসরুক আল-জাআফি (ইকবাল আল-আমাল, খণ্ড ৩, পৃ. ৩৪৫)