এস, এ, এ
ইমাম মাহদী (আ.)এর মাতা ছিলেন এমন একজন মহিয়ষি রমণী ছিলেন যিনি তিনজন ইমামের (ইমাম আলী নাক্বি, হাসান আসকারী এবং ইমাম মাহদী) সান্নিধ্য অর্জন করেন। [1]
নাম, উপাধি:
ইমাম মাহদী (আ.)এর মায়ের বিভিন্ন নাম বর্ণিত হয়েছে যেমন: নারজিস, মালিকা, সেইক্বাল, সুসান, হাকিমা[2], রেইহানা। [3] আল্লামা মাজলিসি (রহ.) লিখেছেন যে, যখন ইমাম মাহদী (আ.)এর নূর জনাবা নারজিরে গর্ভে স্থান্তরিত হয় তখন থেকে তার থেকে নূর পরিলক্ষিত হতো। আরে এ কারণেই তার নাম করণ করা হয় সেইক্বাল অর্থাৎ জ্যোতি। [4] শেখ আব্বাস কুম্মী (রহ.) লিখেছেন: (ইমাম মাহদী (আ.)’র মাতার নাম ছিল মালিকা তিনি ছিলেন রূমের রাজপুত্র ইয়াসুআ’র কন্যা, তিনি ইসলামের সৈন্যদের কাছে বন্দি হন এবং নিজেকে নারজিস নামে পরিচয় দেন যেন তাকে কেউ সনাক্ত করতে না পারে)। [5] এমাদ উদ্দিন তাবারী লিখেছেন: ইমাম মাহদী (আ.)’র মাতা ছিলেন রূমের বাদশার পুত্র ইয়াসুআর কন্যা। তার পিতা নাম রেখেছিলেন মালিকা। [6] বাশার বিন সুলাইমান হতে একটি প্রসিদ্ধ রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম মাহদী (আ.)’র মাতা নিজেকে মালিকা নামে পরিচয় করান। [7] তিনি মুক্তি পেয়ে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র ঘরে আসার পরে তাঁর নামকরণ করা হয় নারজিস।
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র পরিবার তাঁকে সৈয়দা উপাধি দান করেন। হাকিমা খাতুন যখন জনাবা নারজিসকে ডাকতেন তখন তাঁকে সৈয়দা বলে ডাকতেন। [8] জনাবা নারজিসের যিয়ারত নামায় রাযিয়া, মারযিয়া, সিদ্দিকা, তাক্বিয়া, নাক্বিয়া এবং যাকিয়া দ্বারা তাঁর তার বিভিন্ন গুণাবলির বর্ণনা করা হয়েছে।
দাসত্ব থেকে নূরের দেশে
বাসির বিন সুলাইমান আবু আইয়ুব আনসারীর নাতীদের কাছ হতে যারা ইমাম হাদী (আ.)’র প্রতিবেশী ছিলেন এবং তিনি ইমাম (আ.)’র অনুসারী, বিশ্বস্ত ব্যাক্তি ছিলেন তিনি বলেন: একদা ইমাম হাদী (আ.)’র দাশ কাফুর আমার কাছে এস বললো: ইমাম (আ.) আপনাকে ডেকেছেন। আমি তড়িৎ গতিতে ইমামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। আমি ইমাম (আ.)’র অনুমতি নিয়ে গৃহে প্রবেশ করে দেখলাম যে, তিনি তাঁর সন্তান হাসান আসকারী এবং জানাবা হাকিমার সাথে পর্দার ঐ পাশে বসে কথা বলছেন। আমি ইমামের কাছে বসলে তিনি আমাকে বলেন: হে আবু আইয়ুব আনসারীর নাতি তোমার পরিবারের সদস্যরা সর্বদা আমদেরকে ভালবেসেছ এবং আমাদের বেলায়াতকে মেনে নিয়েছ। তোমরা রাসুল (সা.)এর যুগ থেকে তোমরা আমাদের কাছে বিশ্বস্ত ছিলে। আমি তোমাকে একটি কাজের দ্বায়িত্ব দিতে চাই যার কারণে তুমি শিয়াদের উপরে প্রাধান্যতা অর্জন করবে তোমাকে আমাদের বেলায়াতের একজন আস্থাভাজন হবে তোমাকে কিছু গোপন রহস্য সম্পর্কে অবগত করবো এবং তোমাকে একটি দাশি ক্রয়ের জন্য পাঠাবো। [9]
ইমাম হাদী (আ.) রূমী ভাষায় একটি চিঠি লিখেন এবং নিজে নিজের বিশেষ সিল মেরে দেন এবং একটি এক থলে দেন যাতে ২২০টি সোনার আশরাফি মুদ্রা ছিল, উক্ত থলেটি তিনি আমাকে দিয়ে বলেন: এই চিঠি এবং স্বর্ণের থলেটি নাও এবং বাগদাদে চলে যাও এবং অমুক দিনে বাগদাদের পুলের মাথায় দাড়িয়ে থাকবে। যখন নৌকাগুলো পুলের কাছে ভিড়বে এবং দাশিদেরকে নৌকা থেকে নামানো হবে তখন অনেক দাশ ক্রেতা যেমন: বণি আব্বাসের প্রতিনিধিরা, ইরাকের কিছু যুবকেরা উক্ত দাশিদের ক্রয়ের জন্য চারিদিকে ভিড় জমাবে। তুমি সেখানে থাকবে এবং দূর থেকে লক্ষ্য করবে যে কখন ওমর বিন ইয়াযিদ নাখাস (দাশ বিক্রেতা) আসে। সে একটি মেয়েকে বিক্রয়ের জন্য আহবান জানাবে দাশিটির শরীরে দুইটি রেশমী পোষাক থাকবে এবং সে নিজেকে ক্রেতাদের কাছ লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করবে।
তুমি বিক্রেতার কাছে যাবে এবং তাকে বলবে: (আমার কাছে একটি চিঠি আছে যা একজন মহান ব্যাক্তি লিখেছেন। তুমি চিঠিটি ঐ দাশিকে দেখাও। যদি সে সম্মতি দেয় তাহলে আমি এই চিঠির প্রেরকের উকিল স্বরূপ এই দাশিকে ক্রয় করতে চাই)
বাশার বিন সুলাইমান অনতি বিলম্বে বাগদাদের পথে রওনা হয়। নিদৃষ্ট দিনে দাশিদের নৌকা পুলের কাছে এসে ভিড়ে। যেমনটি ইমাম হাদী (আ.) বলেছিলেন ঠিক তেমনটি ঘটে। বাশার বলে: আমি ইমাম হাদী (আ.)’র চিঠিটি বিক্রেতার কাছে দিলাম। সেও কালক্ষেপণ না করেই চিঠিটি দাশির হাতে দেয়। সে চিঠিটি খুলে পড়ে এবং ক্রন্দন করতে থাকে। দাশিটি ওমর বিন ইয়াযিদকে বলে: আমাকে এই চিঠির মালিকের কাছে বিক্রয় করে দাও তানাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দিব। ওমর বিন ইয়াযিদ দাশিটিকে ২২০ আশরাফি মূল্যে বিক্রয় করে দেয়। নারজিস ইমাম হাদী (আ.)’র প্রেরিত উকিলের সাথে তাঁর সম্মানিত ব্যাক্তিত্বের সাথে সাক্ষাত করার উদ্দেশ্যে তাঁর এলাকার দিকে রওনা হন। [10]
বাশার বিন সুলাইমান যখন আমি ওমর বিন ইয়াযিদ থেকে দাশিটিকে ক্রয় করে বাগদাদের পথে রওনা হলাম। পথে একটু বিশ্রামের জন্য একটি ঘর ভাড়া নিলাম। দেখলাম দাশিটি চিঠিটির ঘ্রাণ নিচ্ছিল, চুম্বন করছিল এবং তা বারবার চোখে লাগাচ্ছিল এবং সৌভাগ্য লাভের প্রদত্তে চিঠিটি নিজের শরীরের সাথে স্পর্শ করছিল যেন সে স্বস্তি লাভ করতে পারে। আমি তার এ কাজ দেখে আমি আশ্চর্যিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করি তুমি কি এই চিঠির মালিককে চিন? দাশিটি আমাকে বলে: রাসুল (সা.)’র সন্তানদের পদমর্যাদা সম্পর্কে হে কম অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী তুমি কি মনে কর যে, আমি এই চিঠির মালিককে চিনি না? [11] তাহলে শোন এখন আমি তোমাকে আমার ভাগ্য এবং বন্দি হওয়ার ঘটনাটি বলছি। আমি রূমের বাদশা কাইসারের পুত্র ইয়াসুআর কন্যা মালিকা আমার মা হযরত ঈসা (আ.) এর উকিল সামউন বিন হামুন বিন সাফার কন্যা। আমার যখন ১৩ বছর বয়স তখন আমার পিতা সিদ্ধান্ত নেয় যে, আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথে আমার বিবাহ দিবেন। তিনি একটি জাঁকজমক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন সেনাপ্রধান ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে ৪০ পা বিশিষ্ট একটি সিংহাসন রাখা হয় যা বিভিন্ন মূল্যবান পাথর, রূপা, ইয়াকুত এবং আক্বিক্ব পাথর দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়েছিল তা প্রাসাদের আঙ্গিনায় রাখা হয়। আমার চাচাতো ভাই সম্রাট সেই সিংহাসনের উপরে বসেছিল এবং বিবাহের অনুষ্ঠান শুরু হয়। পাদ্রিরা ইন্জিল গ্রন্থটি পাঠ করার জন্য খুলে হঠাৎ সিংহাসনটি উল্টে পড়ে যায় সম্রাটের ভায়ের ছেলে মাটিতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়, মূর্তিগুলো ভেঙ্গে যায়, পাদ্রিদের চেহারার রং পরিবর্তন হয়ে যায় এবং তারা ভয়ে কাঁপছিল। আমার পিতা বিষয়টি অশুভ মনে করেন এবং সিংহাসনটি ঠিক করার নির্দেশ দেন। পুণরায় সিংহাসনটি সুসজ্জিত করা হয়। তিনি আমার সাথে বিবাহ দেয়ার জন্য তার অন্য এক ভাতিজাকে সিংহাসনে বসানোর নির্দেশ দেন। যখন আমার অন্য এক চাচাতো ভাই সিংহাসনে বসে তখন উক্ত ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটলে সকলে পালিয়ে যায়। আমার বাবা দুঃখভারাক্রান্ত অবস্থায় প্রাসাদে ফিরে যান। [12]
ঐশী স্বপ্ন:
ঐ রাতে বিবাহের অনুষ্ঠানটি নষ্ট হওয়ার কারণে এক আনন্দঘন মূহুর্তে শোকের ছায়া নেমে আসে। মালিকা মনে কষ্ট নিয়ে ঘুমাতে যায়। মালিকা বলেন: আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, হযরত ঈসা (আ.), সামউন এবং কিছু হাওয়ারিউন আমার পিতার প্রাসাদে একত্রিত হয়েছেন। গতকালকে যেখানে বরের বসার সিংহাসনকে রাখা হয়েছিল সেখানে একটি নূরের মেম্বার রাখঅ হয়েছে। হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর নায়েব বা জামাই আলী মোর্তযা অন্যান্য ইমামগণের নূরী আগমণ প্রাসাদটিকে নূরান্বিত করে তোলে। হযরত ঈসা (আ.) উঠে দাঁড়ান এবং রাসুল (সা.)কে অভিনন্দন জানানোর উদ্দেশ্যে এগিয়ে যান। তাঁরা একে অপরের সাথে কোলাকুলি করেন।
রাসুল (সা.) হযরত ঈসা (আ.)কে বলেন: হে রূহুল্লাহ! আমরা তোমার ওয়াসি সামউনের কন্যা মালিকাকে আমার সন্তানের জন্য চয়ন করেছি। হযরত ঈসা (আ.) সামউনকে বলেন: তোমার সম্মান, মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাসুল (সা.)এর বংশের সাথে তোমার বংশের সম্পর্ক গড়ে তোলো।
সামউন কালক্ষেপন না করেই প্রস্তাবটি কবুল করে নেন। তারপর রাসুল (সা.) মেম্বারের উপরে যান এবং মালিকা এবং ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র বিবাহের খুৎবা পাঠ করেন।
মালিকা ঘুম থেকে জেগে উঠে এবং কিছুটা স্বস্তি অনুভব করে। তার এমন মনে হচ্ছিল যেন উক্ত স্বপ্নের কারণে গতকালকের অনাকাংক্ষিত ঘটনার কুপ্রভাবটি অনেকটা লাঘব হয়ে গেছে।
তিনি রাসুল (সা.)এর সন্তানের সাথে তার বিবাহের স্বপ্নটির কথাটিই চিন্তা করছিল কিন্তু কাউকে বিষয়টি বলতে পারছিল না। হাসানের কথা তাঁর অন্তরের অন্তঃস্থলে স্থান করে নিয়েছিল। [13]
স্বপ্নে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ:
নারজিস দিন রাতে আর স্বস্তি অনুভব করতো না এবং সর্বদা রাসুল (সা.)এর নাতীর ভালবাসায় বিভোর ছিলেন। তাঁকে এমনভাবে ভালবাসার জালে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলেন যে, অসুস্থ হয়ে পড়েন।
১৪ রাত অতিবাহিত হওয়ার পরে আবার তিনি স্বপ্নটি দেখেন। কিন্তু এইবার নূরানী নারীরা তাঁর সাথে সাক্ষাত করার জন্য আসেন। হযরত যাহরা (সা.আ.), হযরত মরিয়ম এবং কিছু বেহেশতি হাওয়ারিউন তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে আসেন।
নারজিস বলেন: আমাকে হযরত মরিয়ম বলেন: ((এই ভদ্রমহিলা (হযরত যাহরা (আ.)) হচ্ছেন ইহকাল ও পরকালের সর্বত্তোম নারী এবং ইনিই হচ্ছেন তোমার শাশুড়ি)) আমি তাঁকে জড়িয়ে ধরে বললাম: আপনার সন্তান আমার প্রতি নির্দয়সুলভ আচরণ করেছে; সে আমাকে নিজের ভালবাসায় কষ্ট দিচ্ছে এমনকি তিনি আমার সাথে দেখাও করতে আসেন না।
সে কিভাবে তোমার কাছে আসবে যখন তুমি অন্য খোদায় বিশ্বাসী। এমনকি আমার বোন মরিয়ম তোমাদের এই দ্বীনকে অপছন্দ করে। তুমি যদি চাও যে, আল্লাহ এবং মরিয়ম তোমার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুক তাহলে আমার সন্তান তোমার সাথে সাক্ষাত করার জন্য আসবে। বল: ((اشهد ان لا اله الا الله و اشهد ان محمدا رسول الله))।
আম এই দুটি বাক্য পাঠ করলে হযরত যাহরা (সা.আ.) আমাকে তাঁর বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলেন এবং আমাকে তাঁর সন্তানের আগমণের সুসংবাদ দেন। তারপর থেকে এই নূরী ইমাম প্রত্যেকদিন আমার স্বপ্নে আসেন এবং আমাকে তাঁর সাথে সাক্ষাতের সুসংবাদ দেন। [14]
বন্দিত্বের সুসংবাদ:
বাসার বিন সুলাইমান বলেন: আমি মালিকাকে প্রশ্ন করি: আপনি কিভাবে বন্দি হলেন? তিনি বলেন: যখন আমি স্বপ্নে পৃথিবীর সর্বত্তোম নারীর কাছে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি তখন থেকে আবা মুহাম্মাদ ইমাম আসকারী (আ.) প্রত্যেক রাতে আমার সাথে সাক্ষাত করতে আসেন। তিনি এক রাতে স্বপ্নে আমাকে বলেন: অমুক দিন তোমার বাবা মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য সৈন্যদের প্রেরণ করবে তুমিও দাসীদের পোষাক পরিধান করে তাদের সাথে মিশে যাও এবং সারা সফরে আমাকে কিভাবে চলতে হবে তা আমাকে বলে দেন। ঐ প্রতিক্ষিত দিন যেদিন আমার পিতার প্রেরিত সৈন্যরা যুদ্ধের জন্য যায় আমিও ইমামের কথা অনুযায়ি আমল করি; অতঃপর আমি ইসলামী সৈন্যরা আমাকে বন্দি করে। তুমি ছাড়া আর কেউ জানে না যে, আমি হচ্ছি রূমের বাদশার নাত্নি। [15]
ইমামের সুসংবাদ ও প্রশ্ন:
যখন নারজিস ইমাম হাদী (আ.)এর ঘরে পর্দাপণ করেন তখন ইমাম তাকে স্নেহ ও ভালবাসার সহিত স্বাগতম জানান। ইমাম হাদী (আ.) তাকে বলেন: আল্লাহ কিভাবে তোমাকে ইসলামের সম্মান ও মর্যাদা, নুসরানীদের অপমানিত এবং মুহাম্মাদ (সা.)’র আহলে বাইত (আ.)’র মর্যাদা পরিদৃষ্ট করালেন। নারজিস বলেন: হে রাসুল (সা.)’র সন্তান! আমি কিভাবে আপনার প্রশংসা করবো; কেননা আপনি এই বিষয়ে আমার চেয়ে ভাল জানেন। [16]
ইমাম হাদী (আ.) নারজিসকে বলেন: আমি তোমাকে কিছু দিতে চাই ১০ হাজার দিরহাম অথবা চীরস্থায়ী সম্মান ও মর্যাদা তুমি যেটা পছন্দ করবে সেটা তোমাকে দেয়া হবে। নারজিস বলেন: আমি আপনার পবিত্র মুখ থেকে সুসংবাদ শুনতে চাই।
ইমাম হাদী (আ.) বলেন: আমি তোমাকে এমন এক সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি যে পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত পরিচালনা করবে এবং দুনিয়া যখন জুলুম অত্যাচার দ্বারা পূর্ণ হয়ে যাবে তখন তা ন্যায় দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবে। নারজিস জিজ্ঞাসা করেন: বাচ্চার পিতা কে হবে? ইমাম (আ.) তাকে বলেন: অমুক রাত, অমুক মাস এবং অমুক রূমী বছরে রাসুল (সা.) কাকে সাথে নিয়ে তোমার বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন? তিনি বললেন: হযরত মাসীহ এবং ওয়াসীকে। ইমাম বললেন: হযরত মাসীহ এবং ওয়াসী কার সাথে তোমার বিবাহ পড়িয়ে ছিলেন। তিনি বললেন: আপনার সন্তান আবু মুহাম্মাদের সাথে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন: তুমি কি তাকে চিন? নারজিস বলেন: ঐ রাতে যখন আমি সৈয়দার কাছে মুসলমান হই তারপর থেকে তিনি প্রত্যেক রাতে আমার স্বপ্ন সঙ্গী ছিলেন এবং আমার সাথে সর্বদা দেখা করতে আসেন। [17]
জনাবা হাকিমার অতিথি:
ইমাম হাদী (আ.) তার খাদেম কাফুরকে বলেন: আমার বোন হাকিমাকে খবর দাও যেন সে আমার সাথে দেখা করতে আসে, কাফুর ইমামের বার্তাটি বিলম্ব না করেই জনাবা হাকিমাকে পৌছে দেন। বার্তা পেয়ে জনাবা হাকিমা ইমামের কাছে পৌছায়। ইমাম হাদী (আ.) তাঁর বোনকে বলেন: এই নারীই হচ্ছে সে যার কথা আমি তোমাকে বলেছিলাম। হাকিমা তাকে বুকে টেনে নেয় এবং তাকে অনেক আদর করেন। ইমাম হাদী (আ.) নিজের বোনকে নারজিসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
ইমাম (আ.) হাকিমাকে বলেন: নারজিসকে তোমার বাড়িতে নিয়ে যাও এবং তাকে দ্বীনের ওয়াজিব এবং ইসলামী সুন্নাহসমূহের শিক্ষা দাও। সে হবে আবা মুহাম্মাদের স্ত্রী এবং কায়িম আলে মুহাম্মাদের মাতা। হাকিমা নিজের ঘরে নারজিসকে নিয়ে যায় এবং তাঁকে ইসলামী আকায়েদের শিক্ষা দেয়। নারজিস উৎসাহ উদ্দিপনার সহিত হাকিমার কাছ থেকে তাকওয়ার শিক্ষা অর্জন করেন। [18]
নূরানী সম্পর্ক:
নারজিসের মনে হচ্ছিল যে, হাকিমার ঘরে সময় যেন খুব ধিরে অতিবাহিত হচ্ছে। তিনি ইসলামী জ্ঞান অর্জনের সাথে সাথে হাকিমাকে ইমাম হাসান আসকারী (আ.) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন।
হাকিমা বলেন: একদা আমার ভাতিজা হাসান আসকারী আমার সাথে সাক্ষাত করার জন্য বাড়িতে আসে, সে নারজিসকে দেখতে পায় এবং তার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। হাকিমা বলেন: আপনি যদি চান তাহলে আমি তাকে আপনার কাছে পাঠিয়ে দেই। ইমাম (আ.) বলেন: ফুফু আমি তার প্রতি আশ্চর্যের দৃষ্টিতে দেখেছি; কেননা অচীরেই তার থেকে এমন এক সন্তান জন্মগ্রহণ করবে যে, বিশ্ব যখন অত্যাচারে কলুষিত হয়ে পড়বে তখন সে ন্যায় দ্বারা তা পূর্ণ করে দিবে। আমি বললাম: তাকে কি আপনার কাছে পাঠিয়ে দিব? আপনি আমার পিতার কাছ থেকে অনুমতি নিন। হাকিমা বিলম্ব না করে পোষাক পরিবর্তন করে ইমাম হাদী (আ.)এর বাড়িতে যান। ইমাম হাদী (আ.)কে এই বিষয়ে কথা বলার পূর্বেই তিনি বলেন: হে আমার বোন নারজিসকে আমার সন্তানের কাছে প্রেরণ কর।
হাকিমা বলেন: আমি এই বিষয়ে কথা বলার জন্য আপনার কাছে এসেছিলাম। আল্লাহ চেয়েছিলেন যে, তুমিও যেন এই কাজে শরীক হও এবং এর বিনিময়ে যেন তোমাকে সওয়াব দান করেন। হাকিমা বলেন: আমি ফিরে এসে আমার বাড়িতে এই দুই নূরের মিলনের পূর্বপ্রস্তুতি শুরু করে দেই। তাঁরা আমার বাড়িতে কয়েকদিন আমার বাড়িতে ছিল; তারপর তারা আমার ভাইয়ের বাড়িতে চলে যায়। [19]
কিছু দিনের মধ্যে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র স্ত্রী গর্ভবতি হয়ে পড়ে। ইমাম হাসান আসকারী (আ.) তাঁকে বলেন: তোমার গর্ভে এমন এক সন্তান রয়েছে যার নাম হচ্ছে মুহাম্মাদ এবং সে হবে আমার পরবর্তি ইমাম। [20]
জন্মগ্রহণ:
হাকিমা অ্ন্যান্য দিনের ন্যায় ইমাম এবং তাঁর ভাতিজার সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র বাসায় আসলে ভাতিজা তাঁকে স্বাগত জানায়। হাকিমার পায়ের জুতা খোলার জন্য নারজিস এগিয়ে আসে। হাকিমা তাকে বলেন: আপনি হলেন আমার চেয়ে সম্মানিত। আল্লাহর শপথ আমি কখনই এটা পছন্দ করবো না যে, আপনি আমার পা থেকে জুতা খুলেন। হাকিমা সেদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইমামের ঘরে অবস্থান করেন। পরে যখন তিনি স্বীয় বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন তখন ইমাম হাসান আসকারী (আ.) তাকে বলেন: হে ফুফুজান! আপনি আজকে ইফতারী আমাদের বাড়িতে করুন কারণ আজ ১৫ই শাবানের রাত এবং কিছুক্ষণের মধ্যে সেই পবিত্র এবং সম্মানিত সন্তান আল্লাহ যার দ্বারা মাটিকে মৃত থেকে জিবীত করবে সে জন্মগ্রহণ করবে।
হাকিমা বলেন: আমি আমার ভাতিজাকে জিজ্ঞাসা করলাম: তাঁর মা কে হবে? ইমাম বলেন: নারজিস। হাকিমা বলেন: কিন্তু আমি তার গর্ভবতি হওয়ার কোন লক্ষণ দেখতে পাইনি। ইমাম বলেন: সকালে তার গর্ভবতি হওয়ার লক্ষণ পরিলক্ষিত হবে। [21] তার অবস্থা হচ্ছে হযরত মূসা (আ.)’র মায়ের ন্যায় যার সন্তান প্রসবের সময় ব্যাতিত কোন চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি এবং কেউ তার সম্পর্কে অবগত হয়নি। হাকিমা বলেন: ঐ রাতে আমি নারজিসের কাছে ছিলাম। প্রত্যেক ঘন্টায় তার খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। সে সাধারণ অবস্থায় ঘুমিয়ে ছিল। প্রতিটি মূহূর্তে আমার বিহ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আমি তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ছিলাম যখন বিতরের নামাজ পড়ছিলাম তখন নারজিস ঘুম থেকে উঠে ওযু করে তাহজ্জুদের নামাজ পড়ে। আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, কিছুক্ষণের মধ্যে ফজরের নামাজের সময় হয়ে যাবে। আর কিছুক্ষণ দেরী হলে আমি ইমামের কথায় সন্তিহান হয়ে পড়তাম। পাশের ঘর থেকে ইমাম হাসান আসকারী (আ.) ডেকে বলেন: হে ফুফু আপনি সন্দিহান হবেন না কিছুক্ষণের মধ্যে প্রসবের লক্ষণ পরিলক্ষিত হবে। [22] হঠাৎ নারজিসের মধ্যে জরুরী অবস্থা এবং অস্থিরতা দেখতে পেলাম। আমি নারজিসকে জড়িয়ে ধরলাম। ইমাম (আ.) বললেন: হে ফুফু! আপনি সুরা ক্বদর পাঠ করেন। আমি সুরা পাঠ করা শুরু করলাম। শুনতে পেলাম যে, নারজিসের গর্ভের সন্তানও আমার সাথে উক্ত সুরাটির তেলাওয়াত করছে এবং সে আমাকে সালাম করে। আমিও পেরেশান হয়ে গেলাম। ইমাম (আ.) আমাকে বললেন: হে ফুফু! আপনি আশ্চর্যিত হবেন না। এটা ঐশী শক্তি যে, আমাদের সন্তাগণ হিকমতের সহিত কথা বলে।
হাকিমা বলেন: সেই স্পর্শকারত ক্ষণে নারজিস আমার দৃষ্টির অন্তরালে চলে যায়। মনে হচ্ছিল যেন, আমার ও তাঁর মাঝে একটি জ্যোতি অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে। আমি ভয়ে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র কাছে ছুটে যায়, ইমামকে বললেন: ফুফুজান! আপনি ফিরে যেয়ে দেখেন সে পূর্বের স্থানেই আছে। যখন ফিরে আসলাম তখন আমি নারজিসের মধ্যে এত নূর দেখতে পেলাম যে, আমার চোখ বিস্ময়বিহবল হয়ে পড়ে। দেখলাম পৃথিবীর অন্তর হযরত সাহেবুল আমর (আ.) কিবলামুখী সিজদারত অবস্থায় বলছেন: () তিনি প্রত্যেকটি ইমামের নাম উচ্চারণ করার পরে যখন নিজের নাম আসে তখন বলেন: হে আল্লাহ! আপনি আমাকে যে, ওয়াদা করেছেন তা পূরণ করুন, আমাকে ইমামত ও খেলাফত দান করুন এবং আমার মাধ্যমে পৃথিবীকে ন্যায় দ্বারা পূর্ণ করুন।[23]
পবিত্র জন্মগ্রহণ:
ইমামগণের মাতাদের একটি সৌভাগ্য এই ছিল যে, তাঁদের মাসুম সন্তানগণ পূত পবিত্র অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন। হাকিমা খাতুন বলেন: আমি হযরত হুজ্জাত (আ.)’র জন্মের পরে তাঁর মায়ের নেফাসের রক্ত দেখিনি। [24]
পরলোক গমণ:
জনাবা নারজিসের মৃত্যু সম্পর্কে বিভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। কিছু রেওয়ায়েতে নারজিস ২৬০ হিজরী হযরত হাসান আসকারী (আ.)’র শাহাদত পর্যন্ত তিনি নজরবন্দি অবস্থায় জীবন যাপন করছিলেন। আবু সাহল বলেন: যে রোগে ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র মৃত্যু হয়, আমি ইমামের কাছে যায়। তিনি তাঁর খাদেম আক্বিদকে বলেন: আমার জন্য লবান দ্বারা পানি গরম কর। খাদেম পানি গরম করে এবং ইমাম হুজ্জাত (আ.)’র মা সেইক্বাল সেই পানি ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র জন্য নিয়ে আসে। [25]
অন্য এক প্রসিদ্ধ রেওয়ায়েতের বর্ণনা অনুযায়ি জনাবা নারজিস ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র শাহাদতের পূর্বেই পরলোক গমণ করেন। আবু আলী খাযরানী একজন দাসী ইমাম হাসান আসকারী (আ.)কে দিয়েছিলেন। সেই দাসী ইমাম হাসান আসকারী (আ.)’র শাহাদতের পরে আবু আলীর ঘরে ফিরে আসে এবং তাকে বলে: একদা ইমাম হাসান আসকারী (আ.) তাঁর স্ত্রীকে নিজের ভবিষ্যতের সমস্যাবলি ইমাম মাহদী (আ.)’র অন্তর্ধান, পরিবারের এবং অনুসারীদের উপরে নীতিবিগর্হিত চাপ সম্পর্কে কথা বলছিলেন তখন তিনি নিজের মৃত্যু সম্পর্কেও তাকে অবগত করেন। নারজিস অবসাদগ্রস্থতা অবস্থায় নিজের মৃত্যু কামনা করেন এবং ইমাম হাসান আসকারী (আ.)কে বলেন: দোয়া করুন যেন আল্লাহ আপনার আগে মৃত্যু দান করেন। ইমাম (আ.) তার জন্য দোয়া করেন এবং নারজিস ইমামের শাহাদতের পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। নারজিসের কবরের উপরে একটি ফলক ছিল তাতে লিখা ছিল এই কবরটি মুহাম্মাদ (আ.ফা.)’র। [26]
অবশেষে নারজিস ইহলোক ত্যাগ করেন এবং তাঁকে ইমাম হাদী (আ.)’র পাশে দাফন করা হয়। [27]
তথ্যসূত্র:
[1]. নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১২।
[2]. আল ইরশাদ, পৃষ্ঠা ৬৭২, ফুসুলুল মাহমুম, পৃষ্ঠা ২৯২, রিয়অহিনুশ শারীয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৫।
[3]. কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ২৬৪।
[4]. বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫১, পৃষ্ঠা ১৫।
[5]. আনওয়ারুল বাহিয়া, পৃষ্ঠা ৫১।
[6]. তোহফাতুল আবরার ফি মানকিবিল আয়েম্মাতিল আবরার, পৃষ্ঠা১৭৯।
[7]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৪।
[8]. রিয়াহিনুশ শারীয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৫।
[9]. মানাকেবে আলে আবি তালিব, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৭২, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫১, পৃষ্ঠা ৬।
[10]. কিতাবুল গ্বিরা, পৃষ্ঠা ১৩৮, নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১২, জালালুল উয়ুন, পৃষ্ঠা ১০০১।
[11]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯২, নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১৩।
[12]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৩।
[13]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯২, নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১৪, রিয়াহিনুশ শারীয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩০।
[14]. কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ১৪২, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫১, পৃষ্ঠা ৭, মানাকেবে আলে আবি তালিব, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৭৩।
[15]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৫।
[16]. কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ১৪৩, রিয়াহিনুশ শারীয়া, পৃষ্ঠা ৩১।
[17]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৯৬, রওযাতুল ওয়ায়েযিন, পৃষ্ঠা ২৫২, দালায়েলুল ইমামা, পৃষ্ঠা ২৬৩, নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১৬।
[18]. কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ১৪৪, ইসবাতুল হুদা, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩৯৩, হিল্লিয়াতুল আবরার, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫১৫।
[19]. ইয়ানাবীউল মোয়াদ্দাত, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৪০৯, উয়ুনুল মোজেযাত, পৃষ্ঠা ১৩৮, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫১, পৃষ্ঠা ১২, দালায়েলুল ইমামা, পৃষ্ঠা ২৬৯, হেদায়াতুল কুবরা, পৃষ্ঠা ৩৫৪।
[20]. কামাল উদ্দিন, পৃষ্ঠা ১০১, হেদায়াতুল কুবরা, পৃষ্ঠা ৩৫৩।
[21]. কামাল উদ্দিন, পৃষ্ঠা ১০১, হেদায়াতুল কুবরা, পৃষ্ঠা ৩৫৩।
[22]. নাজমুস সাক্বিব, পৃষ্ঠা ১৮, মুনতাখাবুল আসার, পৃষ্ঠা ৪০০।
[23]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১০১, উয়ুনুল মোজেযাত, পৃষ্ঠা ১৪০, কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ১৫৬, জালালুল উয়ুন, পৃষ্ঠা ১০০৯।
[24]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১০৭, মুনতাখঅবুল আসার, পৃষ্ঠা ৪২১, আনওয়ারুল বাহিয়া, পৃষ্ঠা ৫২৬।
[25]. কিতাবুল গ্বীবা, পৃষ্ঠা ১৮২।
[26]. কামাল উদ্দিন, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১০৫, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৫০, পৃষ্ঠা ৫।
[27]. রিয়াহিনুশ শারীয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৬, ইসবাতুল হুদা, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪১০।