এস, এ, এ
পায়জামা বা পাজামা বলতে বিভিন্ন ধরনের পোশাক বোঝানো হতে পারে। সাধারণ পায়জামা হচ্ছে ঢিলেঢালা ধরনের ট্রাউজার্স, যা বেল্ট ছাড়া ফিতে দিয়ে পরা হয়। এ ধরনের পায়জামা দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় ছেলে-মেয়ে উভয়ের মধ্যে প্রচলিত। অনেক ইংরেজিভাষী দেশে পায়জামা বলতে ঢিলেঢালা দুই প্রস্থ বিশিষ্ট এক ধরনের পোশাককে বোঝানো হয়, যা মূলত ঘুমের সময় রাতপোশাক হিসেবে পরিধান করা হয়। মাঝে মাঝে সাধারণ আরামদায়ক পোশাক হিসেবেও পায়জামার ব্যবহার আছে। পায়জামা বিভিন্ন উপাদানের তৈরি ও স্টাইলও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে।
ইমাম সাদিক (আঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: “আল্লাহ ইব্রাহিমের কাছে ওহী পাঠালেন যে, তোমার গোপনাঙ্গ দেখার কারণে মাটি আমার কাছে অভিযোগ করছে, তুমি মাটি ও তোমার গোপনাঙ্গের মধ্যে একটি আবরণ রাখো যেন মাটি রাগান্বিত না হয়, তখন হজরত ইব্রাহিম পাজামা উদ্ভাবন করে পরিধান করা শুরু করেন।” [এলালুশ শারায়ে, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৮৫, হাদীস নং ২৯, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১২, পৃষ্ঠা ৭৭, হাদীস নং ৩]
জামে বাযান্তি নামক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যেই ব্যক্তি দাঁড়ানো অবস্থায় পায়জামা পরিধান করে, তিন দিনের জন্য তার কোন দোয়া কবুল করা হবে না। [সারায়ের, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৫৮১, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪১৭, আবওয়াবে আহকামে মোলাব্বাস, অধ্যায় ৬৮, হাদীস নং ৫]
আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: দাঁড়ানো অবস্থায় পায়জামা পরিধান করা হচ্ছে দুঃখের দূর্দশার একটি কারণ। [মাকারিমুল আখলাক্ব, পৃষ্ঠা ১০১, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪১৬, আবওয়াবে আহকামে মোলাব্বাস, অধ্যায় ৬৮, হাদীস নং ২]
অন্য হাদিসে আলী (আ.) বলেছেন: “দাঁড়িয়ে কিবলা বা অন্য ব্যক্তির দিকে মুখ করে পায়জামা পরবেন না।” [মাকারিমুল আখলাক্ব, পৃষ্ঠা ১০১, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪১৬, আবওয়াবে আহকামে মোলাব্বাস, অধ্যায় ৬৮, হাদীস নং ৪]
এবং অন্য একটি বর্ণনায় আলী (আ.) বলেছেন: “নবীগণ পায়জামার আগে জামা পরিধান করতেন।” [মাকারিমুল আখলাক্ব, পৃষ্ঠা ১০১, ওয়াসায়েলুশ শিয়া, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪১৬, আবওয়াবে আহকামে মোলাব্বাস, অধ্যায় ৬৮, হাদীস নং ৩]
ফিকহ আল-রেজা নামক গ্রন্থে বলা হয়েছে: দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় পায়জামা পরিধান করবেন না, কেননা তা মানুষের ধ্বংস এবং দূঃখ দূর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তবে বসে থাকা অবস্থায় পায়জামা পরিধান করুন এবং পরার সময় এই দোয়াটি পড়ুন:
بِسْمِ اللهِ اَللّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَتي وَلا تَهْتِكْني في عَرَصاتِ الْقِيامَةِ وَاعْفُ فَرْجي وَلا تَخْلَعْ عَنّي زينَةَ الاْيمانِ.
[মুস্তাদরাকে ওসায়েল, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ৩১৩, অধ্যায় ৪৪, হাদীস নং ১]।
মাকারেম আল-আখলাকে নাজাত নামক গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করেছে যে, পায়জামা পরা অবস্থায় এই দোয়াটি পড়তে হবে:
اللّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَتِي وَآمِنْ رَوْعَتِي وَاعْفُ فَرْجِي وَلا تَجْعَلْ لِلشَّيْطَانِ فِي ذلِکَ نَصِيبآ وَلا لَهُ إلى ذلِکَ وُصُولاً فَيَصْنَعَ لِىَ الْمَكايِدَ وَيُهَيِّجَني لاِرْتِكابِ الْمَحارِمِ.
সাধারণত আরবরা লম্বা জামার নীচে পায়জামা পরত না। এমনকি এখন, কমবেশি, বেশিরভাগ আরবরা এমনটি করে থাকে। উল্লেখিত বর্ণনাটি এমন লোকদের জন্য উল্লেখ করা হয়েছে যাদের নড়াচড়ার কারণে মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ উন্মুক্ত হতে পারে।