Press "Enter" to skip to content

হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)এর যিয়ারতের ফযিলত

এস, এ, এ

হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) ছিলেন হযরত ইমাম মুসা ইবনে জাফর (আ.) এর কন্যা। তিনি শিয়াদের মাঝে কারিমায়ে আহলে বাইত (আ.) নামে সুপ্রসিদ্ধ। এছাড়া তিনি তাহেরা, হামিদা, বিররাহ, রাশিদা, তাকিয়া, নাকিয়া, সাইয়্যিদা, রাদ্বিয়া, উখতুর রেযা, সিদ্দিকা, শাফিয়া ইত্যাদি উপাধীর অধিকারী। তার মায়ের নাম ‘নাজমা’। তিনি ১৭৩ হিজরী’র ১লা যিলক্বদ মদিনায় জন্মগ্রহণ করেন।

হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)এর যিয়ারত সম্পর্কে একাধিক রেওয়ায়েত পবিত্র ইমাম (আ.)দের থেকে বর্ণিত হয়েছে। উক্ত রেওয়ায়েত দ্বারা আমরা হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)এর সম্মান এবং মর্যাদা সম্পর্কে অবগত হতে পারি। তাঁর যিয়ারত সম্পর্কে যে রেওয়ায়েতগুলো বর্ণিত হয়েছে তা মাসুম ইমাম (আ.)গণ ব্যাতিত অন্যদের ক্ষেত্রে খুব কমই বর্ণিত হয়েছে। নিন্মে তাঁর যিয়ারত সম্পর্কে কয়েকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা হলো:

১- হজরত মোহাম্মাদ (সা.) বলেছেন: যদি কেউ আমার অথবা আমার সন্তানদের মধ্যে হতে একজনের যিয়ারত করে তাহলে কেয়ামতের দিন আমি তার সাথে সাক্ষাত করবো এবং তাকে কেয়ামতের ভয় ভীতি থেকে পরিত্রাণ দান করবো। (কামেলুয যিয়ারত, পৃষ্ঠা ১১)

২- ইমাম জাফর সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন: আমাদের কাছে পবিত্র স্থান সমূহের মধ্যে কুম হচ্ছে অন্যতম। অচিরেই আমার সন্তানদেরর মধ্যে একজন মহিয়সী নারিকে সেখানে দাফন করা হবে যার নাম হবে ফাতেমা। যারাই তার যিয়ারত করবে সে হবে বেহেস্তবাসি। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০২, পৃষ্ঠা ২৬৬)

৩- ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, যদি কেউ হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর যিয়ারত করে তাহলে সে বেহেস্তবাসি হবে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০২, পৃষ্ঠা ২৬৫, কামেলুয যিয়ারাত, পৃষ্ঠা ৫৩৬, হাদিস নং ৮২৬, সাওয়াবুল আমাল, পৃষ্ঠা ১২৪, উয়ুনে আখবারে ইমাম রেযা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ২৬৭)

৪- ইমাম রেযা (আ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন: যদি কেউ হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)এর যিয়ারত করে তাহলে তার অবস্থা হবে এমন যে সে হককে চিনতে পেরেছে এবং সে হবে বেহেস্তবাসি। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০২, পৃষ্ঠা ২৬৬)

৫- ইমাম জাওয়াদ (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: যদি কেউ ‘কুমে’ আমার ফুফুর যিয়ারত করে তাহলে সে হবে বেহেস্তবাসি। (কামেলুয যিয়ারাত, পৃষ্ঠা ৫৩৬, হাদিস নং ৮২৭)

৬- ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেন যে, মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট পবিত্রতম স্থান হচ্ছে কাবা শরিফ, রাসুল (সা.)’এর কারণে মদিনার পবিত্রতা এবং সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে অনরূপভাবে ইমাম আলি (আ.)’এর কারণে কুফা এবং আমাদের আহলে বাইত (আ.)দের কাছে পবিত্রতম স্থান সমূহের মধ্যে কুম হচ্ছে অন্যতম কেননা অচিরেই সেখানে আমার সন্তানদের মধ্যে হতে একজন কন্যাকে দাফন করা হবে যার নাম হবে ফাতেমা। আর যে তার যিয়ারত করবে সে হবে বেহেস্তবাসি। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৮, পৃষ্ঠা ৩১৬, ৩১৭)

৭- সাআদ বিন সাআদ নামক এক ব্যাক্তি ইমাম রেযা (আ.)কে ইমাম মূসা কাযিম (আ.)’এর কন্যা হজরত ফাতেমা (সা.আ.) সম্পর্কে প্রশ্ন করলে ইমাম (আ.) তার উত্তরে বলেন: যে তাঁর কবরের যিয়ারত করবে সে জান্নাতবাসি হবে। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৮, পৃষ্ঠা ৩১৬, ৩১৭)

৮- ইমাম রেযা (আ.) সাআদকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আমাদের মধ্যে থেকে তুমি কি এমন কাউকে চিন যার কবর তোমাদের কাছে রয়েছে? সাআদ তাঁর উত্তরে বলে হ্যাঁ। তিনি কি হজরত মূসা ইবনে জাফর (আ.)’এর কন্যা ফাতেমা? সাআদ তাঁর উত্তরে বলে হ্যাঁ। জেনে রেখ হে সাআদ! যারা পূর্ণ মারেফতের সহিত তাঁর যিয়ারত করবে তার পুরষ্কার হচ্ছে বেহেস্ত। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৪৮, পৃষ্ঠা ৩১৬, ৩১৭)

৯- ইমাম মোহাম্মাদ তাকি (আ.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন: যারা আমার ফুফুর যিয়ারত করবে তারা হবে বেহেস্তবাসি। (বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ১০২, পৃষ্ঠা ২৬৫- ২৬৬)

উক্ত রেওয়ায়েত সমূহ থেকে স্পষ্ট হয় যে, রাসুল (সা.) এবং সকল আয়েম্মা (আ.)গণের নিকটে হজরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)’এর যথেষ্ট সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে। আর নিঃসন্দেহে তিনি হচ্ছেন এমন এক মহিয়সী নারি যিনি সকল শিয়াদের মোয়াদ্দাতের মণিকোঠায় অবস্থান করছেন।