বার ইমামিয়া শিয়া সম্প্রদায় বিশ্বাস করে যে, যেহেতু রাসূল (স.) তার প্রতিনিধি বা ইমাম নিযুক্ত করে গেছেন। এই ইমামদের(আ:) সংখ্যা হচ্ছে বারোজন(আ:), যাদের প্রথম হচ্ছেন মওলা আলী (আ.) এবং শেষ মওলা মাহদী (আ.)। শুধু তাই নয় এই বারো জন(আ:) বংশপরম্পরায় পৃথিবীতে আগমণ করবেন। যেহেতু প্রথম মওলা আলী (আ.) সবার কাছেই অত্যন্ত পরিচিত এবং একাধারে তাঁর(আ:) বংশধর ইমামগণ(আ:) জ্ঞানী ব্যক্তিদের কাছে সর্বদাই পরিচিত ছিল। তাই শেষ যুগের ইমাম অর্থাৎ ইমাম মাহদী (আ.) কবে ও কোথায় আগমন করেছেন, তা তাদের কাছে দিবালোকের মতই অত্যন্ত সুস্পষ্ট। আর বার ইমামিয়া শীয়ারা গাদীর বিশ্বাসি তাই তারা বারতম ইমাম মওলা সাহেবুজ্জামান(আ:) এর প্রতি আনুগত্যে অঙ্গিকারাবদ্ধ।
এই অংশে ইমাম মাহদী (আ.) সংক্রান্ত শিয়া সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গিই তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ। একটা কথা না বললেই নয় তা হলো শীয়ারা কোরআন হাদিসের আলোকে মওলা সাহেবুজ্জামানকে (আ:) মানে ও ভালোবাসে। তবে শীয়াদের প্রেম বিবেক বর্জিত নয়। আবেগের সাথে বিবেক বুদ্ধি মিলেয়েই সত্যিকার প্রেমাস্পদের মিলন হয়।
“তৌরাতের পরে যাবুরের মধ্যেও আমরা উল্লেখ করেছি যে আমার সৎকর্মশীলবান্দারাই হবে জমিনের উত্তরাধিকারী”![সুরা আম্বিয়া /১০৫]
“তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি দান করেছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদের ভূমণ্ডলে (তাঁর) প্রতিনিধি (খলিফা) নিযুক্ত করবেন যেমন তাদের পূর্ববর্তীদের তিনি প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছিলেন; এবং তাদের জন্য সে ধর্মকে তিনি প্রভাবশালী করবেন যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির অবস্থার পর তাদের জন্য তা নিরাপত্তায় পরিবর্তন করে দিবেন’। এমনভাবে যে, তারা কেবল আমারই উপাসনা করবে, আমার সাথে কোন অংশী করবে না; অনন্তর যারা অকৃতজ্ঞ হবে বস্তুত তারাই হল অবাধ্য–“।[সুরা নুর /৫৫]
তাফসীরকারকের ধারণায় রাসূলুল্লাহর (সা.) যুগ থেকে ধর্মের বিজয় বাস্তবিক পক্ষে প্রতিশ্রুতির পূর্ণ নিশ্চয়তা এখনও অধরা রয়েছে এবং অদ্যাবধি এমন কোন যুগ আসেনি যাকে আয়াতটির পূর্ণ প্রতিচ্ছবি বলা যায়। দৃষ্টান্তস্বরূপ আয়াতটিতে সেই ধর্মের বিজয়ের কথা বলা হয়েছে যাকে আল্লাহ মনোনীত করেছেন এবং যে ধর্মের মনোনয়নের ঘোষণা গাদীরের ময়দানে দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ কোরআনে যে ধর্মের প্রতি তাঁর সন্তুষ্টি ঘোষণা করেছেন তা মওলা আলীর (আ.) বেলায়াত সম্বলিত ধর্ম, অন্য কোন ধর্ম নয়। সুতরাং যতক্ষণ না গাদীরের ব্যবস্থাপনা দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে এবং ইসলামী পতাকায় মওলা আলীর(আ:) বেলায়াতের মোহর অঙ্কিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এ প্রতিশ্রুতির সত্যায়নের কোন প্রশ্নই উঠতে পারে না। এছাড়া ভীতি নিরাপত্তায় বদলে যাওয়ার ধারণাও রাসূলের যুগে বা সাহাবিগণের যুগে পূর্ণমাত্রায় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও ভয়-ভীতি প্রতি যুগে বিরাজিত ছিল এবং সর্বজনীন ন্যায় ও সুবিচারও কখনই প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
আর এজন্যই স্বয়ং মহানবী (সা.) বলেছেন: “এসব কাজ আমার সর্বশেষ উত্তরাধিকারীর (ইমাম মাহদীর) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে যখন দুনিয়া ন্যায় ও সুবিচারে পূর্ণ হয়ে যাবে এবং জোর-জুলুমের বিনাশ ঘটবে।[ আল্লামা জাওয়াদী]
“সেদিনকে স্মরণ কর যেদিন আমরা প্রত্যেক সম্প্রদায় থেকে এক একেকটি দলকে একত্রিত করবো যারা আমার নিদর্শনাবলি মিথ্যা প্রতিপন্ন করত “! [সূরা নামল/৮৩]
হাদিস বর্ণনাকারী বলেন যে ইমাম জাফর সাদিক (আ.) আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, “জনগণ উক্ত আয়াত সম্পর্কে কিরূপ চিন্তা কর? আমি বললাম: তারা মনে করে যে উক্ত আয়াতটি কিয়ামত সম্পর্কে অবর্তীর্ণ হয়েছে।
ইমাম(আ:) বলেন: “এমনটি নয় বরং উক্ত আয়াতটি হচ্ছে রাজআত সম্পর্কিত কেননা আল্লাহ কি কিয়ামতের দিন কিছু মানুষকে পুণঃউত্থান করবেন এবং অন্যান্যদেরকে ছেড়ে দিবেন তাতো হতে পারে না–“। বরং কিয়ামত সংক্রান্ত আয়াত হচ্ছে “এবং আমরা মানুষকে একত্রিত করব অতঃপর তাদের কাউকে ছাড়ব না”। [সূরা কাহফ/ ৪৭]
“তারা আল্লাহর নামে কঠোর শপথ করে যে, যার মৃত্যু হয় আল্লাহ তাকে পুনরুজ্জীবিত করবেন না। অবশ্যই এর পাকাপোক্ত ওয়াদা হয়ে গেছে। কিন্তু, অধিকাংশ লোক তা জানে না”। [সূরা নাহল/৩৮]
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) উক্ত আয়াত সম্পর্কে বলেন যে, “যখন ইমাম মাহদী (আ.) বিপ্লব করবেন তখন কিছু লোক যারা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে রাজআত করবেন তাদের কাছে একটি করে তরবারি থাকবে এবং তারা আমাদের জিবীত শিয়াদেরকে দান করবে এবং তাদেরকে বলবে যে আল্লাহ অমুক অমুককে রাজআত করেছেন এবং তারা সকলেই ইমাম মাহদির (আ.)’ সাথে রয়েছেন। উক্ত খবরটি আমাদের শত্রুদের কাছেও পৌছাবে তারা আামদের অনুসারিদেরকে বলবে যে তোমরা মিথ্যা বলনি–“।[তাফসিরে নূরুস সাকালাইন, ৩য় খণ্ড]
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন: “যারা রাজআত সম্পর্কে ঈমান রাখে না তারা আমদের অনুসারি নয়। [বিহারুল আনওয়ার, ৫৩তম খন্ড, পৃষ্ঠা ৯২]
মামুনুর রশিদ ইমাম রেজাকে (আ.) বলেন: “রাজআত সম্পর্কে আপনার মতামত কি?
ইমাম রেজা(আ.) বলেন: “রাজআত সংঘটিত হবে কেননা কোরআনে বর্ণিত হয়েছে যে, পূর্বের বিভিন্ন উম্মতের মাঝেও রাজআত সংঘটিত হয়েছিল এবং রাসুল (সা.)-এর উম্মতের মধ্যেও রাজআত সংঘটিত হবে। কেননা পূর্বে যে সকল ঘটনা সমূহ বিভিন্ন উম্মতের মাঝে ঘটেছিল আমার উম্মতের মধ্যেও ঘটবে। [উয়ুনে আখবারে ইমাম রেযা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৫]
ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন: “যখন আহলে বাইতের(আ:) আল কায়েম(আ:) আবির্ভূত হবে এবং আন্দোলন করবেন তখন তিনি যাবতীয় সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা সমানভাবে জনগণের মাঝে বণ্টন করবেন এবং সর্বত্র ন্যায়পরায়ণতা ও ন্যায়বিচার কায়েম করবেন। যে কেউ তাঁর আনুগত্য করবে সে আসলে মহান আল্লাহরই আনুগত্য করবে এবং যে কেউ তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করবে সে আসলে মহান আল্লাহরই বিরুদ্ধাচরণ করবে। তিনি(আ:) (তুরস্কের?) আনতাকিয়ার একটি গুহা থেকে তাওরাত ও অন্যান্য আসমানী গ্রন্থ বের করে আনবেন এবং তাওরাতের বিধানের ভিত্তিতে ইহুদীদের মধ্যে, ইঞ্জিলের বিধান অনুযায়ী খ্রিস্টানদের মধ্যে ও যূবুরের বিধানের ভিত্তিতে এ গ্রন্থের অনুসারীদের মধ্যে এবং পবিত্র কোরআনের আয়াতসমূহের ভিত্তিতে মুসলমানদের মধ্যে বিচার-ফয়সালা করবেন। পৃথিবীর ভেতর ও বাইরের যাবতীয় সম্পদ তাঁর কাছে সঞ্চিত হবে। আর তিনি(আল কায়েম(আ:) জনগণকে বলবেন: “তোমরা সবাই যে জিনিসের জন্য আত্মীয়তা ও রক্ত-সম্পর্ক ছিন্ন করেছ, পরস্পরের রক্ত ঝরানো হালাল বলে গণ্য করেছ এবং নানা হারাম কাজ করেছা সেই জিনিসের দিকে চলে এসো।”
তিনি(আ:) প্রত্যেক ব্যক্তিকে এতটা দেবেন যে, এর পূর্বে সে কারো কাছ থেকে তা পায় নি। তিনি(আল কায়েম আ:) পৃথিবীকে ঠিক সেই মাত্রায় ন্যায়বিচার দিয়ে পরিপূর্ণ করে দেবেন ঠিক যেভাবে তা অন্যায়-অবিচার, বৈষম্য ও অকল্যাণে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল”। [বিহারুল আনোয়ার , ৫২তম খণ্ড, পৃ. ৩৫১]
মহানবী (সা.) বলেছেন: “মাহ্দীর যুগে আমার উম্মত এমন নেয়ামত লাভ করবে যে, তারা পূর্বে কখনই তা লাভ করে নি। আকাশ থেকে তাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হবে এবং তখন পৃথিবীর বুকে সব ধরনের উদ্ভিদই জন্মাবে।” [ইবনে হাম্মাদের হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি, পৃ. ৯৮]
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আরো বলেছেন যে, “তাঁর(আ:)উম্মত তাঁর(আ:) (মাহ্দী) কাছে এমনভাবে আশ্রয় নেবে যেমনভাবে মক্ষীরাণীর কাছে মৌমাছিরা আশ্রয় নিয়ে থাকে। তিনি(আ:) পৃথিবীকে ঠিক সেভাবে ন্যায়বিচার দিয়ে পূর্ণ করে দেবেন যেভাবে তা অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্য দিয়ে পূর্ণ হবে। আর সমগ্র মানব জাতি ঠিক তাদের আদি সমাজের মতো হয়ে যাবে। তিনি(আ:) অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করবেন না।” [ইবনে হাম্মাদের হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি, পৃ. ৯৯]
ঠিক তাদের আদি সমাজের মতো’ এ বাক্যাংশের অর্থ হচ্ছে আদি মানব সমাজ যা এক অখণ্ড জাতি ছিল। মানব জাতি স্বভাবজাত প্রকৃতি ও নির্মলতার ভিত্তিতে জীবন যাপন করত এবং তাদের মধ্যে কোন মতপার্থক্য ছিল না। আর এ বিষয়টি পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে “মানব জাতি এক অখণ্ড জাতি ছিল।” [সূরা বাকারাহ্ /২১৩]
ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর যুগে মানব সমাজ দারিদ্র্যমুক্ত ও অভাবমুক্ত একটি সমাজে পরিণত হবে। মহানবী (সা.) আরো বলেছেন: “আসমান ও যমীনের বাসিন্দারা তার প্রতি সন্তুষ্ট হবে। আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করার ব্যাপারে কোন কার্পণ্য করবে না এবং যমীনেও উদ্ভিদ, বৃক্ষ ও তরুলতা জন্মানোর পথে কোন বাধা থাকবে না অর্থাৎ পৃথিবী বৃক্ষ, তরুলতা, ফুলে-ফলে ভরে যাবে। এর ফলে জীবিতরা আকাঙ্খা করতে থাকবে” হায় যদি এ সব নেয়ামত ভোগ করার জন্য মৃতরা জীবিত হতো।” [ইবনে হাম্মাদের হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি, পৃ. ৯৯]
ইমাম বাকির (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে “আমি (আ:) যেন আল কায়েমের সঙ্গী-সাথীদেরকে দেখতে পাচ্ছি যারা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে। সবকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং তাদের আজ্ঞাবহ, এমনকি ভূ-পৃষ্ঠের হিংস্র পশুকুল এবং আকাশের শিকারী পাখীরাও তাদের সন্তুষ্টি অর্জন করার চেষ্টা করবে। সবকিছুই, এমনকি ভূ-পৃষ্ঠের এক অঞ্চল আরেক অঞ্চলের ওপর গর্ব করে বলবে,-
“আজ আল কায়েমের (আ:) একজন সঙ্গী আমার ওপর পদধুলি দিয়েছেন এবং আমাকে অতিক্রম করেছেন।” [বিহারুল আনোয়ার, ৫২তম খণ্ড, পৃ. ৩২৭]
ইমাম বাকির (আ.) থেকে আরো বর্ণিত হয়েছে “যখন আমাদের কায়েম(আ:) আবির্ভূত হবে ও বিপ্লব করবে তখন পৃথিবীর যে কোন অঞ্চলে যে ব্যক্তিকেই প্রতিনিধি হিসাবে প্রেরণ করবে তখন তাকে বলবে: “তোমার হাতের তালুতেই তোমার কর্মসূচী ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা আছে। যখনই তোমার ক্ষেত্রে কোন ব্যাপার ঘটবে যা তুমি বুঝ নি এবং যার হিকমতও তোমার জানা নেই তখন তুমি তোমার হাতের তালুর দিকে তাকাবে এবং সেখানে যে নির্দেশনা বিদ্যমান আছে তদনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” [নুমানী প্রণীত গাইবাত, পৃ. ৩১৯]
ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর সাথে সংশ্লিষ্ট রেওয়ায়েতসমূহ থেকে খুব ভালোভাবে বোঝা যায় যে, তিনি যে বিশ্ব ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা করবেন তা হযরত সুলাইমান (আ.) ও বাদশাহ যূলকারনাইনের রাজত্ব অপেক্ষাও বিশাল। আর কতিপয় রেওয়ায়েত থেকেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।
যেমন ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন: “আমাদের (ইমাম মাহ্দীর) রাজত্ব হযরত সুলায়মান ইবনে দাউদ (আ.)-এর রাজত্বের চেয়ে ব্যাপক এবং আমাদের রাজ্যের পরিসীমা তাঁর রাজ্যের পরিসীমা অপেক্ষা বড় হবে।”
রেওয়ায়েতসমূহের ভিত্তিতে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর হুকুমত সমগ্র বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হবে। যার ফলে এমন কোন জনপদ থাকবে না যেখানে মহান আল্লাহর একত্ব এবং মহানবী (সা.)-এর রিসালাতের সাক্ষ্য দেয়া হবে না। আর পৃথিবীর বুকে এমন কোন বিধ্বস্ত অঞ্চলও বিদ্যমান থাকবে না যার পুনর্গঠন ও আবাদ করা হবে না”।[শেখ তুসি, কিতাবুল গেইবাত, পৃ. ২৪২]
মওলা মোহাম্মদ (স:) বলেছেন: “মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদেরকে এমন বুদ্ধি- বিবেক ও মারেফাত দান করেছেন,যার ভিত্তিতেই তাদের কাছে ইমাম মাহদী (আঃ) এর গায়বতও ইমামের আবির্ভাবের মতোই একটি বিষয় হয়ে দাড়াবে। এই সমস্ত লোককে ঐ সমস্ত মুজাহিদদের সমতুল্য সাব্যস্ত করা হবে যারা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপস্থিতিতে তরবারী দ্বারা যুদ্ধ করতেন।এরাই হলেন আমাদের মুখলেস এবং সত্যিকারের অনুসারী।এরাই হলেন সেই সমস্ত ব্যক্তি যারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে মানুষকে আল্লাহর পথে আহবান করে থাকেন”।[বিহারুল আনওয়ার, ৫১তম খণ্ড, পৃ. ৩৬০ থেকে৩৬১]
ইমাম জয়নুল আবেদিন (আঃ) বলেন: “ঐ সমস্ত লোক,যারা গায়বতকালে ইমাম মাহদীর(আ:) ইমামতিতে বিশ্বাসী এবং তার আবর্ভাবের অপেক্ষায় আছেন,তারা প্রত্যেক যুগের মানুষের তুলনায় উত্তম অবস্থানে আছেন।[বিহারুল আনওয়ার, ৫১তম খণ্ড, পৃ. ৩৬০ থেকে৩৬১। শেখ তুসি, কিতাবুল গেইবাত, পৃ. ২৪২]
ইমাম জাফর সাদিক (আঃ) বলেন: “যারা মাহাদীর হুকুমতের অপেক্ষা করতে করতে ইহজগত ত্যাগ করবে,তারা তো ঐ লোকগুলোর মতো হবে যারা তার(মেহেদী (আ:) এর কাছে উপস্থিত থাকবে”।
*কিছুক্ষন পর তিনি পুনরায় বলেন: “আল্লাহর কসম এরা হলো ঐ সমস্ত লোকের মতো যারা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর সামনে শাহাদাতের মর্যাদায় ভুষিত হয়েছেন”। [বিহারুল আনওয়ার, ৫১তম খণ্ড, পৃ. ৩৬০ থেকে৩৬১। শেখ তুসি, কিতাবুল গেইবাত, পৃ. ২৪২]
আমির আল মুমিনিন ইমাম মওলা আলী (আঃ) বলেন: “যদি আমাদের আল ক্বায়েম উঠে দাঁড়ায় তাহলে আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে, পৃথিবী তার উদ্ভিদরাজি গজাবে, বান্দাহদের অন্তরগুলো থেকে শত্রুতা দূর হয়ে যাবে (শান্তিতে বসবাসের জন্য)এবং হিংস্র পশু ও গৃহপালিত পশুরা একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বাস করবে।”[বিহারুল আনওয়ার খন্ড, ৫২ পৃ ৩১৬]
ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন: “মানুষ তাদের ইমামকে হারিয়ে ফেলেছে। কিন্তু সে হজ মৌসুমে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে দেখবে। কিন্তু মানুষ তাকে দেখতে পাবে না”।[উসুলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ.-৩৩৭]
আসবাগ বিন নাবাতাহ্ বলেন: “আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর সমীপে উপস্থিত হয়ে তাঁকে চিন্তায় মগ্ন থাকতে দেখলাম। তিনি আঙ্গুল মোবারক দিয়ে মাটিতে টোকা দিচ্ছিলেন”। বললাম: “আপনাকে কেন চিন্তিত লাগছে ,আপনি কী মাটির প্রতি ভালবাসা রাখেন”!? বললেন: “না ,আল্লাহ্ সাক্ষী কখনই মাটি ও এই দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা আমার ছিল না বা এখনও নেই। এক জাতকের বিষয়ে চিন্তা করছি যে আমার বংশ থেকে আসবে এবং আমার সন্তানদের মধ্যে একাদশতম ব্যক্তি সে। তার নাম “ মাহ্দী ” । সে দুনিয়াকে ন্যায় ও আদর্শে ভরে দেবে। তা যতই জুলুম ও অত্যাচারে ডুবে থাকুক না কেন। সে অন্তর্ধানে থাকবে এ বিষয়ে একদল ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং অন্য একদল হবে হেদায়ত প্রাপ্ত”,। [উছূলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ.-৩৩৮]
ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন: “যদি তোমাদের কাছে খবর পৌঁছায় যে জামানার (যুগের) ইমাম অদৃশ্যে আছেন তবে তাঁর এই অদৃশ্য হওয়ার খবরটিকে অস্বীকার করবে না”।[ উছূলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ.-৩৩৮]
তিনি(আ:) আরও বলেছেন: “আল কায়েমের (ইমাম মাহ্দী) দুইটি অন্তর্ধান থাকবে যার একটি স্বল্প মেয়াদী এবং অন্যটি দীর্ঘ মেয়াদী। স্বল্প মেয়াদী অন্তর্ধানে তাঁর বিশেষ কিছু অনুসারী ছাড়া তাকে কেউ দেখতে পাবে না এবং দীর্ঘ মেয়াদী অন্তর্ধানে তাঁর অতি নিকটের লোকেরা ছাড়া অন্য কেউ তাঁর ব্যাপারে জানতে পারবে না”। [উসুলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ. ৩৪০]
তিনি(আ:) আরও বলেছেন: ” আল কায়েম (ইমাম মাহ্দী) এমন অবস্থায় কিয়াম করবেন যে তিনি কারো সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ নন বা কেউ তাঁর হতে বাইয়াত গ্রহণ করে নি”।
নবী করিম (সঃ) বলেছেন: “আল কায়েম (ইমাম মাহ্দী) আমার সন্তান ,তার নাম ও ডাক নাম আমার নাম ও ডাক নামের অনুরূপ। দেখতেও অবিকল আমার মতো। শরীরের আকৃতি ও গঠন আমার মতোই। তার সুন্নত (অনুসৃত নীতি) হচ্ছে আমারই সুন্নত। মানুষদেরকে আমার দীন ও শরীয়তের এবং আল্লাহর কিতাবের প্রতি দাওয়াত দেবে। যারা তাঁকে অনুসরণ করবে তারা আমাকে অনুসরণ করলো এবং যারা তাঁর সাথে বিরোধিতা করবে তারা আমার সাথে বিরোধিতা করলো। আর যারা তাঁর অন্তর্ধানকে অস্বীকার করবে তারা আমাকে অস্বীকার করলো”। [আ’য়ালামুল ওয়ারী, পৃ.-৪২৫]
ইমাম যয়নুল আবেদীন (আ.) বলেছেন: “আমাদের কায়েমের (ইমাম মাহ্দী) (আ:)সাথে বিভিন্ন নবীর যেমন: নূহ ,ইবরাহীম ,মূসা ,ঈসা ,আইয়ুব ও হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর মিল রয়েছে। নূহ নবীর সাথে বয়সের দিক দিয়ে। হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর সাথে গোপনে আবির্ভূত হওয়া ও মানুষের থেকে দূরে থাকা। মূসা (আ.)-এর সাথে অদৃশ্য থাকা ও জীবন নাশের ভয়ের ব্যাপারে। ঈসা (আ.)-এর সাথে মানুষ যেভাবে তাঁর ব্যাপারে মতবিরোধ করেছিল সে দিক দিয়ে। আইয়ুব (আ.)-এর সাথে তার দুঃখ-বেদনা ও উদ্বেগ লাঘব হয়ে মুক্তির পথ সুগম হওয়ার দিক থেকে। নবী করীম (সা.)-এর সাথে তার মতো তলোয়ার হাতে সংগ্রাম করা”।[উছূলে কাফি, খণ্ড-১, পৃ.-৩৪২, আ’য়ালামুল ওয়ারী, পৃ. ৪২৫, কামালুদ্দিন, পৃ.-৩২২, ৩১ তম অধ্যায়, হা. ৩]
ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন: “এরূপ যে শেষ জামানার ইমাম অদৃশ্যে থাকবে। ঐ সময় আল্লাহর বান্দারা অবশ্যই যেন তাকওয়ার (পরহেযগারী) পথ অবলম্বন করে ও আল্লাহর দ্বীনকে আঁকড়ে থাকে”। [কামালুদ্দিন, পৃ.-৩২২, ৩৩ তম অধ্যায়, হা. ৫]
তিনি(আ:) আরও বলেছেন: “মানুষের সামনে এমন এক সময় আসবে যখন তাদের ইমাম তাদের চোখের অন্তরালে (অদৃশ্যে) থাকবে”।যুরারাহ বলেন: “তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, ঐ সময় মানুষের দায়িত্ব বা করণীয় কী”? তিনি (আ:)বললেন: “যা কিছু তাদেরকে আগেই বলা হয়েছে বা তাদের কাছে আগেই পৌঁছেছে (অর্থাৎ দীনের প্রতি বিশ্বাস ও তাঁর দেয়া আদেশ-নির্দেশসমূহ) তা জামানার ইমাম আবির্ভূত হওয়া পর্যন্ত মেনে চলা”।
তিনি(আ:) আরও বলেছেন: “এই ঘটনাটি (ইমামের আবির্ভাব ও তার উত্থান) তখন সংঘটিত হবে যখন এমন কোন দল ও গোষ্ঠী অবশিষ্ট থাকবে না মানুষের উপর শাসনকার্য পরিচালনা করে নি। যাতে করে কেউ বলতে না পারে যে, আমাদের হাতে ক্ষমতা থাকলে আমরাও থাকলে আমরাও ন্যায় ও আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করতাম বা তার ভিত্তিতে শাসনকার্য পরিচালনা করতাম। অবশেষে কায়েম (ইমাম মাহ্দী) ন্যায় ও আদর্শের পক্ষে কিয়াম করবেন”।[কামালুদ্দিন, পৃ. ৩৫০, ৩৩ তম অধ্যায়, হা.-৪৪, ইসবাতুল হুদাত, খণ্ড ৭, পৃ.-৪২৭ থেকে ৪২৮]
ইমাম বাক্বীর (আঃ)বলেন: “যখন আমাদের ক্বায়েম (ইমাম মাহদী আঃ) উঠে দাঁড়াবে তখন সে তার হাতকে বান্দাহদের (দাসদের)মাথার ওপর রাখবে। এরপর সে তাদের বুদ্ধির সমাবেশ ঘটাবে এবং তাদের সহনশীলতাকে পূর্ণতা দিবে। এরপর আল্লাহ তাদের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তিকে বাড়িয়ে দিবেন যেন তাদের ও আল ক্বায়েমের মাঝে কোন পর্দা না থাকে। যখন আল ক্বায়েম (ইমাম মাহদী আঃ) তাদের সাথে কোন কথা বলতে চাইবে তখন তারা শুনতে পাবে এবং তারা তাকে দেখতে পাবে যদিও তারা তাদের নিজের জায়গাতেই থাকবে।” [ইয়াও মুল খালাস প ২৬৯]
ইমাম (আ) মুসা বিন জাফর আল-বাগদাদী কে বলেন: “আমি দেখলাম তুমি আমার পরবর্তী ইমামের ব্যাপারে জানতে চাচ্ছো, জেনে রাখো যে কেউ যদি রাসুলের পরবর্তী ইমামদের ব্যাপারে জ্ঞানার্জন করে কিন্তু আমার ছেলের ইমামত কে অস্বীকার করে তাহলে সেই ব্যক্তির মতোই যে ব্যক্তি সকল নবী-রাসুল দের নবুওয়ত কে স্বীকার করল মুহাম্মাদের নবুওয়ত ব্যতিত, যে ব্যক্তি এরুপ সর্বশেষজন কে অস্বীকার করে তাহলে সে মূলত সকল অগ্রবর্তীগণদের ই অস্বীকারকারী হয়ে যায় তেমনি আমাদের মধ্যে সর্বশেষ ইমামের আনুগত্য করার অর্থই হচ্ছে আমাদের সর্বপ্রথম ইমামের আনুগত্য করা, আর সর্বশেষ ইমাম কে অস্বীকার মানেই হচ্ছে সর্বপ্রথম ইমাম কে অস্বীকার করা। এটা তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, আমার ছেলের অদৃশ্যকালের সময় দীর্ঘ করা হবে তাই লোকেরা তার সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়বে, তবে তারা নয় যাদের ঈমান কে আল্লাহ নিরাপদ রাখবেন”। [বিহার আল-আনোয়ার, খন্ড ৫১, পৃঃ ১৬০, ইসবাত আল-হুদাত, খন্ডঃ ৬, পৃঃ ৪২৭]
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) বলেছেন: “ইমাম বাকের (আ.)কে এই রাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা উত্তরে বলেন: “১৫ই শাবানের রাত শবে ক্বদরের পরে সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ রাত”! [মাফাতিহুল জিনান, দ্বিতীয় অধ্যায়, পৃষ্ঠা ২৬৭]
ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) বলেছেন: “যে ব্যাক্তি এ রাতকে ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করবে, কেয়ামতে আল্লাহ সেই ব্যাক্তির অন্তরকে জীবিত রাখবেন যেদিন সকলের অন্তর মারা যাবে। [মাফাতিহুল জিনান, দ্বিতীয় অধ্যায়, পৃষ্ঠা ২৬৭]
ইমাম জাফর সাদিক (আঃ) বলেন: “এই দুনিয়াতে দুই দল ছাড়া আর কিছুই নেই এক দল করুনার মাধ্যমে নিজেকে উপরের দিকে নিয়ে যায়, অন্য যারা তাওবার দ্বারা নিজেকে সংশোধন করে, সে কখন পারবে তাওবা করতে? যদি সেজদার অবস্থায় তাওবা চাওয়া মাধ্যমে তার গর্দান কেটে যায় কিন্তু আমাদের (আহলে বাইত আঃ) এর বেলায়ত না থাকে তাহলে তার তাওবা গ্রহণ করা হরে না।[আল খেসাল শেখ সাদুক ১খন্ড পৃ ৪১]
ইমাম বাকির (আ.) বলেছেন: “আল্লাহর কসম ,আল্লাহ্ তায়ালা যখন হযরত আদম (আ.)-এর রূহ মোবারককে কবজ করে নিলেন ,তখন থেকে পৃথিবীকে এমন অবস্থায় ত্যাগ করেন নি যে ,তাতে কোন ইমাম থাকবে না। যার মাধ্যমে মানুষ হেদায়েত প্রাপ্ত হয়ে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করতে পারে। আর সেই(আল কায়েম আ:) হচ্ছে মানুষের জন্য আল্লাহর হুজ্জাত। আর জমিন কখনই ইমাম ছাড়া অর্থাৎ মানুষের জন্য আল্লাহর হুজ্জাত ব্যতীত অবশিষ্ট থাকবে না”। বিহারুল আনোয়ার
শাইখ কুলাইনি (রহ.) মুফাযল (রহ.) থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন যিনি ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, “আল্লাহর কসম, আপনার ইমাম (আ:) দীর্ঘকাল আপনার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকবেন যতক্ষণ না বলা হবে সে কোথায় গেল? তাকে(আ:) কি হত্যা করা হয়েছে? নাকি সে(আ:) মারা গেছে? নাকি সে(আ:) ধ্বংস হয়ে গেছে? এবং আপনাকে এমনভাবে পরীক্ষা করা হবে যে তার বিচ্ছেদে শোকাহত মুমিনদের চোখ থেকে অশ্রু প্রবাহিত হবে। ঝামেলা এবং অসুবিধাগুলি আপনাকে এমনভাবে পীড়িত করবে যেমন একটি জাহাজ ঝড়ের মধ্যে আটকা পড়ে। অতঃপর যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারে অটল এবং যাদের অন্তরে ঈমান প্রতিষ্ঠিত ও খোদাই করা হয়েছে, তারা ছাড়া আর কেউ রক্ষা পাবে না।” [আল-কাফী, কিতাব অফ ডিভাইন প্রুফ, গায়বাত অধ্যায়]
আর একটি বিষয় হচ্ছে ইমামগণ(আ:) আধ্যাত্মিক বিষয়েরও হেদায়েতকারী। আর তা হচ্ছে এমন যে ,পবিত্র ইমামগণ(আ:) যেভাবে মানুষের বাহ্যিক আমলের ব্যাপারে পথনির্দেশনা দেন বা পরিচালনা করেন তেমনি বাতেনী বা অভ্যন্তরীণ (আধ্যাত্মিক বিষয়ের) ব্যাপারেও নির্দেশনা দেন বা পরিচালনা করেন অর্থাৎ তার হেদায়েতের মাধ্যমেই আধ্যাত্মিক জীবন পরিচালিত হয় এবং সৎকর্মসমূহ তার ঐশী নির্দেশনায় ঊর্ধ্বে যাত্রা করে।
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ: শীয়া সুন্নি দু’পক্ষের হাদীস বেত্তাগণ এ বিষয়ে একমত যে, শেষ যমানায় ইমাম মাহদী (আ:) আবির্ভূত হয়েছেন এবং দুনিয়ার সকল অন্যায়-অত্যাচার-যুলুম, ফিতনা-ফ্যাসাদকে ধ্বংস করে ন্যায়পরায়ণতা যা আল্লাহর আইন তা প্রতিষ্ঠা করতে আত্মপ্রকাশিত হবেন পুনরায়। আর রাসূলে খোদা (সা.)-এর বর্ণনা অনুযায়ী তিনি হচ্ছেন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বংশের নবম সন্তান, ইমাম রেযা (আ.)-এর বংশের চতুর্থ সন্তান এবং ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর ঔরসজাত সন্তান।