এস, এ, এ
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, সুরা বাকারা’র শেষ দুই আয়াতের ফযিলত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, এই আয়াত দুইটি আল্লাহর আরশের নিচে গুপ্তধন স্বরূপ যা তাঁকে দান করা হয়েছে। (ইবনে কাসীর, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৪৮)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন: একদা রাসুল (সা.)’র সমীপে হযরত জিব্রাইল (আ.) উপস্থিত ছিলেন এমতাবস্থায় তিনি আকাশ থেকে একটি শব্দ শুনতে পান। জিব্রাইল আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেন: এখনই আকাশের দরজা উন্মুক্ত হওয়ার সাথে সাথে ফেরেশতা অবতরণ করে এবং রাসুল (সা.)’র সমীপে উপস্থিত হয়ে সুরা ফাতিহা এবং সুরা বাকারা’র শেষ দুটি আয়াতের সুসংবাদ দেন যা ইতিপূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। (মাজমাউল বায়ান, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৬৯২)
কিছু কিছু রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, সুরা বাকারা’র এই আয়াত দুইটি রাসুল (সা.)’র মেরাজকালীন সময়ে সপ্তম আসমানে তাঁকে উপহার স্বরূপ দান করা হয়েছিল।
আলী বিন ইব্রাহিম ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) হতে বর্ণনা করেছন যে, সুরা বাকারা’র এই শেষ আয়াত দুইটি মেরাজের রাতে কোন মাধ্যম ব্যাতিত আল্লাহ রাসুল (সা.)কে দান করেন। (ইবনে কাসীর, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৪৯)
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.) রাসুল (সা.) হতে বর্ণনা করেছন তিনি বলেছেন: আমি যখন সীদরাতুল মুনতাহা’য় পৌছায় যখন আমার ও আল্লাহর মাঝের দূরত্ব ছিল ধনুক ও তার দড়ির ন্যায়, তখন আল্লাহ বলেন (ءَامنَ الرّسولُ بِما أُنزلَ إِلیهِ مِن رَبّهِ…..) আমি ও আমার উম্মতের পক্ষ থেকে আল্লাহকে জবাব দিলাম: (والمُؤمِنونَ كُلٌّ ءَامنَ بِاللّهِ و مَللكَتهِ و كُتبهِ و رُسلهِ لانُفرِّقُ بیَنَ أَحد مِن رُسلِهِ) এবং আরো বললাম: (سَمِعنا و أَطَعنا غُفرانَكَ رَبَّنا و إِلیكَ المَصِیر) তখন আল্লাহ বলেন: (لاَیُكِلّفُ اللّهُ نَفسًا إِلاّ وُسعَها لَها ماكَسبَت و عَلیهَا ما اكتَسبَت) আমি আল্লাহর কাছে চাইলাম (رَبَّنا لاَتُؤاخِذنَا إَن نَسِینا أو أَخطَأنا) আল্লাহ বলেন: আমি কবুল করলাম। আমি বললাম: (رَبَّنا ولاَتَحمِل عَلَینا إِصرًا كَماحَملتَهُ عَلى الّذِینَ مِن قَبلِنا) আল্লাহ এই দোয়াটিও কবুল করেন। আমি বললাম: (رَبَّنا و لاَتُحمِّلنا مالاَطاقَةَ لَنَا بِهِ واعفُ عَنّا واغفِرلَنا وارحَمنَا أَنتَ مَولَنا فَانصُرنا عَلىالقَومِ الكَفِرین) আল্লাহ উত্তরে বলেন: আপনি আমার কাছে যা চেয়েছেন তা আনাকে এবং আপনার উম্মতকে দান করলাম। (নূরুস সাকালাইন, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩০৬)
এই আয়াত দুইটি পাঠের ফযিলত সম্পর্কে রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, কেউ যদি এই আয়াত দুইটি রাতে পাঠ করে তাহলে তার জন্য এই আয়াত দুইটি যথেষ্ট হবে (সে সারা রাত সকল প্রকারের জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদে থাকবে)। (মাজমাউল বায়ান, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৬৯২)
ইমাম আলী (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: “আমার মতে যার সামান্যও বুদ্ধিজ্ঞান আছে, সে এই দুটি আয়াত পাঠ করা ছাড়া নিদ্রা যাবে না” (ইবনে কাসির, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৪৯)
কাতাদা হাদীসে মুরসাল হিসেবে রাসুল (সা.) হতে বর্ণনা করেছন যে, আল্লাহ তায়ালা আসমান ও জমিন সৃষ্টির দুই হাজার বছর পূর্বে তাঁর গ্রন্থ থেকে এই আয়াত দুইটি আয়াত নাযিল করেন। সুতরাং কেউ যদি এই আয়াত দুইটি তিন রাত নিজের ঘরে পাঠ করে তাহলে শয়তান তার থেকে দূরে থাকবে। (ইবনে কাসির, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৪৯)
রাসুল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেছেন: তোমরা নিজেদের সন্তানদেরকে সুরা বাকারা’র দুইটি আয়াতের শিক্ষা দাও কেননা এই দুইটি কোরআনের আয়াত এবং এমন দোয়া যা পাঠ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়। (ফায়ায়েলে কোরআন, পৃষ্ঠা ২৩৩)
آمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْهِ مِن رَّبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آمَنَ بِاللّهِ وَ مَلآئِكَتِهِ وَ كُتُبِهِ وَ رُسُلِهِ لاَنُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّن رُّسُلِهِ وَ قَالُواْ سَمِعْنَا وَ أَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ إِلَيْكَ الْمَصِيرُ * لاَيُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ عَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَتُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَطَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ.
উচ্চারণ: আমানুর-রাসুলু বিমা উংজিলা ইলাইহি মির রাব্বিহি ওয়াল মু’মিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহা’দিম-মির রুসুলিহি। ওয়া ক্বালু সামি’না, ওয়া আত্বা’না, গুফরা নাকা, রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।লা ইউ কাল্লিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আ’হা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ’লাইহা মাক তাসাবাত। রব্বানা লা-তু আখজিনা-ইন্না সিনা- আও আখত্বা’না। রাব্বানা ওয়ালা তাহ’মিল আ’লাইনা ইসরান কামা হা’মাল তাহু আ’লাল্লাজিনা মিন ক্বাবলিনা। রব্বানা ওয়ালা তুহা’ম্মিলনা মা-লা ত্বাকাতালানা বিহ। ওয়াআ’ফু আ’ন্না, ওয়াগ ফিরলানা, ওয়ার হা’মনা। আংতা মাওলানা, ফানছুরনা আ’লাল ক্বাওমিল কাফিরিন।