Press "Enter" to skip to content

হজরত আলী আকবর (আ.) কেন ইমাম হুসাইন (আ.) কাছে পানি চান?

এস, এ, এ

হুসাইনী শিবিরে একমাত্র হজরত আলী আকবর (আ.)ছিলেন সেই সৈনিক যিনি কারবালার ময়দান থেকে ফিরে আসেন। হজরত আলী আকবর (আ.) ছিলেন ইমাম হুসাইন (আ.) এমন এক সন্তান যিনি ছিলেন রাসুল (সা.) এর সদৃশ।

যখন কারবালার ময়দানে হজরত আলী আকবর (আ.) তাঁর বাবার কাছে যুদ্ধের জন্য অনুমতি নিতে আসেন তখন তাঁর বয়স ছিল প্রায় ২৫ বছর। কিন্তু হজরত আলী আকবর (আ.) এর বয়স নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।

হজরত আলী আকবর (আ.) সে যুগের যুদ্ধনীতি অনযায়ি নিজেকে পরিচয় করান, এজিদী বাহিনীকে নসিহত করেন, রাসুল (সা.) এর আহলে বাইত (আ.) এর সম্মান তাদের সামনে তুলে ধরেন এবং বলেন যে, তারা যেন ইমাম হুসাইন (আ.) এর সাথে যুদ্ধ করে নিজেদের ঈমান ও আখেরাতকে নষ্ট না করে। যখন তিনি দেখেন যে তাঁর কথা কুফাবাসী এবং এজিদী বাহিনীর উপরে কোন প্রভাব ফেলছে না তখন তিনি নিজের সমস্ত শক্তি দ্বারা শত্রুদের উপরে হামলা করেন এবং প্রায় ১২০ জনকে হত্যা করে। কিন্তু যুদ্ধের এক পর্যায়ে তাঁর পিপাসা আরো বেড়ে যায় তখন তিনি হুসাইনী শিবিরে ফিরে আসেন এবং তাঁর বাবার ইমাম হুসাইন (আ.) কে বলেনঃ হে বাবা! পিপাসায় হয়তো আমি মারা যাব। আপনি কি আমার জন্য একটু পানির ব্যাবস্থা করতে পারেন।

যদিও আলী আকবর (আ.) জানতেন যে, হুসাইনী তাবুতে কোন পানি নাই ছোট ছোট শিশুরা পানির জন্য আহাজারি করছে কিন্তু তারপরেও তিনি তাঁর বাবার কাছে পানি চান। তার জন্য বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমনঃ

১-তার বাবা এবং রাসুল (সা.) এর আহলে বাইত (আ.) গণ তাঁকে দেখে আনন্দিত হতে পারে যে সে এখনও জিবীত আছে।

২- হয়তো বাবাকে দেখে তার মধ্যে আবার পুণরায় তাঁর মনোবল বৃদ্ধি পাবে।

যখন হজরত আলী আকবর (আ.) তাবুতে ফিরে আসেন তখন ইমাম হুসাইন (আ.) তাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং বলেন সে আমার সন্তান! এটা অমার জন্য খুব কষ্টদায়ক যে তুমি আমার কাছে পানি চাচ্ছ আর আমি তোমাকে দিতে পারছি না। তুমি অতি তাড়াতাড়ি আমার নানা রাসুল (সা.) এর সাথে সাক্ষাত করবে তিনি তোমাকে কাউসারের পানি পান করাবেন যার ফলে তুমি আর তৃষ্ঞার্ত হবে না।

ঐতিহাসিকবিদগণ বলেনঃ যে ইমাম হুসাইন (আ.) নিজের জিহবাকে আলী আকবর (আ.) এর মুখে দিয়ে বুঝাতে চান তোমার বাবা তোমার চেয়েও বেশী তৃষ্ঞার্ত।

আবার অনেকে বলেছেন ইমাম হুসাইন (আ.) নিজের হাতের আংটির পাথরকে আলী আকবর (আ.) এর মুখে রেখে দেন এবং তিনি তা চুষতে চুষতে যুদ্ধের ময়দানে চলে যান।

উক্ত ঘটনা থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয় তা হচেছ যে হজরত আলী আকবর (আ.) তাঁর বাবা ইমাম হুসাইন (আ.) কে অত্যান্ত ভালবাসতেন। এজন্য তিনি পানির অজুহাতে তার বাবাকে শেষ বারের মতো দেখতে আসেন এবং এটা শরীয়ত এবং আকল বীরোধি কোন বিষয় না। ইমাম হুসাইন (আ.) ও তার মুখে পাথরের আংটি রেখে দেন যেন তাঁর তৃষ্ঞা নিবারণ হয়।

সূত্রঃ

– মাকাতেলুত তালেবীন।

– হায়াতে ইমাম হুসাইন(আ.)।

– লাহুফ, সৈয়দ ইবনে তাউস।

– নাফসুল মাহমুম।