ইমাম জাফর আস-সাদিক (আ.) থেকে বর্ণিত:
لَا تَأْكُلْ مِنَ السَّمَكِ إِلَّا مَا كَانَ لَهُ فُلُوسٌ
“তুমি মাছ খেও না, যতক্ষণ না তার আঁশ (স্কেল) থাকে।”(আল-কাফি, শেইখ কুলাইনি, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২১৯)
ইমাম আলী (আ.) বলেছেন:
كُلْ مَا فِي الْبَحْرِ مِمَّا لَهُ فُلُوسٌ وَ لَا تَأْكُلْ مَا لَيْسَ لَهُ فُلُوسٌ
“সাগরে যা কিছু আছে তার মধ্যে যার আঁশ আছে তা খাও, আর যার আঁশ নেই তা খেও না।” (তাহযীবুল আহকাম, শেইখ তূসী, খণ্ড ৯, পৃ. ৩২)
যে মাছের আঁশ (scale) আছে তা হালাল
যে মাছের আঁশ নেই তা হারাম
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
এ নিয়মের পেছনে কয়েকটি বৈজ্ঞানিক দিক রয়েছে:
১. টক্সিন ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
আঁশবিহীন মাছ সাধারণত তলদেশে (bottom feeder) থাকে। এরা পানি ও কাদার ময়লা, ব্যাকটেরিয়া, টক্সিন (ভারী ধাতু, সীসা, পারদ ইত্যাদি) বেশি শোষণ করে। যেমন ক্যাটফিশ বা শিং মাছ পানি দূষণ পরিষ্কার করে, ফলে এদের শরীরে টক্সিন জমে যায় যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
২. পরজীবী (parasite) বহন
আঁশ মাছের শরীরকে একটি প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা আবরণ দেয়, যা রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে। আঁশবিহীন মাছের দেহ নরম ও অনিরাপদ, ফলে এতে পরজীবী, কৃমি ও ব্যাকটেরিয়া বেশি থাকে।
৩. পরিবেশগত ভূমিকা
আঁশবিহীন মাছ প্রায়শই পানি পরিষ্কার করার কাজে প্রকৃতি দ্বারা নির্ধারিত। এদের খাওয়া মানে প্রকৃতির ফিল্টার সিস্টেম নষ্ট করা এবং দূষণ মানবদেহে প্রবেশ করানো।
৪. শরীরের গঠন ও হজমযোগ্যতা
আঁশযুক্ত মাছের প্রোটিন ও ফ্যাট সহজে হজম হয় এবং মানবদেহের উপযোগী।
আঁশবিহীন মাছের শরীরে বেশি চর্বি, কোলেস্টেরল ও টক্সিক উপাদান থাকে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে।
শিয়া মাজহাবে মাছকে “আঁশ” এর মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে—
আঁশওয়ালা মাছ = নিরাপদ ও হালাল
আঁশবিহীন মাছ = দূষণ, টক্সিন, পরজীবী ঝুঁকি = হারাম
অতএব, এটা শুধু আধ্যাত্মিক নয়, বরং বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত।




