Press "Enter" to skip to content

নাদে আলী ও তার উপকারীতা

এস, এ, এ

নাদে আলী’র শাব্দিক অর্থ হচ্ছে আলীকে ডাকা। দোয়া-এ নাদে আলী নামে ইমাম আলী (আ.)-এর প্রশংসায় দুটি দোয়া রয়েছে: নাদে আলী সাগীর ও নাদে আলী কাবীর।

নাদে আলী সাগীর:

নাদে আলী সাগীর হচ্ছে কবিতার দুইটি শ্লোক। যা বিহারুল আনওয়ারের ২০ তম খন্ডে ৭৩ নং পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এর বর্ণনাকারীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। আহলে সুন্নাতের আলেম কাজী কামাল উদ্দিন মীর হুসাইন বিন মুঈন উদ্দিন মিবাদী ইয়াযদী দিওয়ানে আমীরুল মু’মিনিন নামক গ্রন্থে নাদে আলী সগীরটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন: রাসুল (সা.) ওহদ যুদ্ধের দিন গায়ব থেকে এই কথামালা শুনতে পান। (শারহে দিওয়ানে আমীরুল মু’মিনিন, পৃষ্ঠা ৪৩৪)

রেওয়ায়েতের বিষয়বস্তুতে বর্ণিত হয়েছে যে, হাতিফ এই দুটি লাইন রাসুল (সা.)এর জন্য পাঠ করেছিলেন এবং অন্য এক মতে ওহুদ যুদ্ধের দিনে রাসুল (সা.)কে এই দোয়াটি বলা হয়:

“ناد علیا مظهر العجائب * تجده عونا لک فی النّوائب

کلّ غمٍّ و هَمٍّ سَینجَلی* بِوَلایَتِکَ یا علیّ یا علی یا علی.”

রেওয়ায়েতে এতটুকুই বর্ণিত হয়েছে, তবে কোথাও কবিতাটিকে দোয়া হিসেবে পড়তে হবে বলে উল্লেখ করা হয়নি।

নাসেখুত তাওয়ারিখ নামক গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে যে, এই কবিতা দ্বারা রাসুল (সা.)’র সাথে আল্লাহ কথা বলেছিলেন। (নাসেখুত তাওয়ারিখ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ৩৫৫)

তবে যে সকল দোয়ার সনদ বর্ণিত হয়নি তা সওয়াবের আশায় পাঠ করা যেতে পারে। কিন্তু কেউ যদি মনে করে যে তা কোন মাসুম (আ.) হতে বর্ণিত হয়েছে তাহলে সমস্যা রয়েছে।

নাদে আলী কবীরের উপকারীতা:

আল্লামা মাজলিসি (রহ.) তাঁর যাদুল মাআদ নামক দোয়ার গ্রন্থে নাদে আলী কবীর পাঠের বিভিন্ন উপকারীতা সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন এবং দোয়াটির বিভিন্ন আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট বর্ণনা করেছেন যেমন:

১. কিছু লোক যদি কোন ব্যাক্তিকে আটকে রাখে এবং উক্ত ব্যাক্তি ৭ বার নাদে আলী পাঠ করে তাদের উদ্দেশ্যে ফু দেয় তাহলে ঐ ব্যাক্তির কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

২. কোন ব্যাক্তি যদি তার কোন শত্রুকে ভয় করে তাহলে সে যেন প্রত্যেকদিন ২৭ বার নাদে আলী পাঠ করে তাহলে তার শত্রু বিদূরিত হবে।

৩. কাউকে যদি যাদু করা হয় তাহলে সে যেন নাদে আলী পাঠ করে কুয়ার পানিতে ফুঁক দেয় তারপর ঐ পানি দ্বারা গোসল করে এবং কিছু পানি পান করে তাহলে তার উপরে কৃত জাদুর প্রভাব নষ্ট হয়ে যাবে।

৪.  কাউকে যদি বিষ খাওয়ানো হয় তাহলে চীনামাটির পাত্রে কস্তুরী ও জাফরান দ্বারা নাদে আলী লিখতে হবে এবং ২১ বার পাঠ পাঠ করে তাতে ফুঁ দিয়ে উক্ত পানিটি পান করতে হবে। তাহলে বিষের প্রভাব নষ্ট হয়ে যাবে।

৫. বৃষ্টির পানিতে ১৮বার নাদে আলী পাঠ করে ফুঁ দিয়ে পান আশাহীন রোগী আরোগ্য লাভ করবে।

৬. সমস্যায় নিপতিত হলে এক হাজার বার নাদে আলী পাঠ করলে উক্ত সমস্যার সমাধান হবে।

৭. কোন ব্যাক্তি যদি চরমভাবে রাগান্বিত হয়ে যায় তাহলে  তার সম্মুখে ৭১ বার এবং আস্তে করে ৩ বার নাদে আলী পাঠ করে নিজের ফুঁকে দেয় তাহলে রাগ মলিন হয়ে যাবে।

৮. শুক্রবারে ১২ বার নাদে আলী পাঠ করলে কোন কাজ সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হবে।

৯. অপবাদ অপনোদনের জন্য সকাল, সন্ধ্যা ৪০ বার নাদে আলী পাঠ করতে হবে।

১০. ধনবান হওয়ার জন্য প্রত্যহ সকালে ১২ বার নাদে আলী পাঠ করতে হবে।

১১. ধন দৌলত অধিক হওয়ার জন্য প্রত্যেকদিন ৩১ বার নাদে আলী পাঠ করতে হবে।

১২. শত্রুর ওপরে প্রাধান্য বিস্তার বা জয়ী হওয়ার জন্য প্রত্যহ ১৭ বার এবং সহজে বিবাহ হওয়ার জন্য প্রত্যহ ১৮ বার পাঠ করতে হবে নাদে আলী ।

১৩. গোলা বারুদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রত্যহ ৩৪ বার এবং কুনজর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তিনদিন ২০ বার করে পাঠ করতে হবে।

১৪. যুদ্ধে বিজয় অর্জনের জন্য প্রত্যেকদিন ৪০ বার পাঠ করতে হবে।

১৫. রাসুল (সা.)কে স্বপ্নে দেখার জন্য প্রত্যেক রাতে ৭ বার পাঠ করতে হবে।

১৬. বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৭ দিন ১৬বার করে পাঠ করতে হবে।

১৭. রহস্য আবিষ্কার  এবং দৌলত অর্জনের জন্য প্রত্যেকদিন ১৬বার পাঠ করতে হবে।

১৮. রাগ দমনের জন্য ৮ দিন ১৮ করে পাঠ করতে হবে।

১৯. জ্ঞান অর্জনের জন্য ফজরের নামাজের সময় ১৭ বার পাঠ করতে হবে।

২০. হালাল আশা পূরণের জন্য ৬দিন ১০০ বার পাঠ করতে হবে।

২১. সম্মান বৃদ্ধির জন্য প্রত্যেকদিন ১০ বার পাঠ করতে হবে।

২২. দুই জালেম ও নিষ্ঠুরের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টির জন্য প্রত্যেকদিন ২০ বার পাঠ করতে হবে।

২৩. মানুষের মাঝে দ্বন্দ বা বিভেদ দূর করার জন্য প্রত্যহ ৩০ বার পাঠ করতে হবে।

২৪. শত্রুর রোষনল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রত্যহ ১০০ বার পাঠ করতে হবে।

২৫. মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রত্যহ ২৫ বার পাঠ করতে হবে।

২৬. শত্রুর অন্তর নরম করার জন্য ৬দিন ১০০ বার করে পাঠ করতে হবে।

২৭. চক্রান্ত, প্রতারণা, বিদ্রোহ এবং শত্রুর অনিষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রত্যেকদিন ১০০ বার পাঠ করতে হবে।

২৮. অত্যাচারি এবং শত্রু দমনের জন্য বুধবার সূর্যোদয়ের সময় ৪১ বার পাঠ করতে হবে এবং তার ঘরের দিকে ফু দিতে হবে।

নাদে আলী কবীর:

بِسمِ اللهِ الرَّحمن الرَّحیم

نادِ عَلیاً مَظهَرَ العَجائِب تَجِدهُ عَوناً لَکَ فِی النَوّائِب لی اِلی اللهِ حاجَتی وَ عَلَیهِ مُعَوَّلی کُلَّما اَمَرتَهُ وَ رَمَیتَ مُنقَضی فی ظِللّ اللهِ وَ یضِللُ اللهُ لی اَدعُوکَ کُلَّ هَمٍ وَغَمًّ سَینجَلی بِعَظَمَتِکَ یا اللهُ بِنُبُوَّتِکَ یا مُحَمَّدَ بِوِلایتِکَ یاعَلِی یا عَلِی یا عَلِی اَدرِکنی بِحقِّ لُطفِکَ الخَفی اللهِ اَکبَرُ اَنا مِن شَرِّ اَعدائکَ بَریءٌ اللهُ صَمَدی مِن عِندِکَ مَدَی وَعَلَیکَ مُعتَمَدی بِحقِّ إِیاکَ نَعبُدُ وَ إِیاکَ نَستَعینُ یااَبالغَیثِ اَغِثنی یااَبَاالَحَسَنَین اَدرِکنی یاسَیفَ اللهُ اَدرِکنی یابابَ اللهِ اَدرِکنی یاحُجَّهَ اللهِ اَدرِکنی یا وَلِی اللهِ اَدرِکنی بِحَقَّ لُطفِکَ الخَفی یا قَهّارُ تَقَهَّرتَ بِالقَهرِ وَ القَهر ُفی قَهرِ قَهرکَ یا قَهارُ یا قاهِرَ العَدُوّ یا واِلی الوَلِی یامَظهَرَ العَجائِبِ یامُرتَضی عَلِی رَمَیتَ مِن بَغی عَلَی بِسَهمِ اللهِ وَسَیفِ اللهِ القاتِلِ اُفَوَّضُ اَمری اِلی اللهِ اِنَّ اللهُ بَصَیرٌ بِالعَبادِ وَ اِلحُکُم اِلهٌ واحِدٌ لا اِلهَ اِلاّ هُوَ الرَّحمنُ الرَّحیمُ یاغیاثَ المُستَغیینِ یا دَلیلَ المُتَحیرِینَ یا اَمانَ الخائِفینَ یا مُعینَ المُتَوَکِلینَ یا رَاحِمَ المَساکینَ یا اِلهَ العالَمَینَ بِرَحمَتِکَ وَصَلَّی اللهُ عَلی سَیدِنا مُحَمَّدٍ وَالِهِ اَجمَعین وَ الحَمدُ اللهِ رَبِّ العالَمینَ.

☘☘☘☘☘