Press "Enter" to skip to content

রোজার যাকাত বা ফেতরা

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মুহাম্মাদ আলী নওয়াজ খান

ফিতরা বা ফেতরা(فطرة) আরবী শব্দ, যা ইসলামে যাকাতুল ফিতর (ফিতরের যাকাত) বা সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরের সদকা) নামে পরিচিত। ফিতর বা ফাতুর বলতে সকালের খাদ্যদ্রব্য বোঝানো হয় যা দ্বারা রোজাদারগণ রোজা ভঙ্গ করেন।[১] যাকাতুল ফিতর বলা হয় ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরীব দুঃস্থদের মাঝে রোজাদারদের বিতরণ করা দানকে।

যাকাত-আল-ফিতর রোজাকে পূর্ণতা দান করে এবং বিপদাপদ থেকে মানুষকে রক্ষা করে ।

ইমাম সাদিক্ব (আ:) বলেন:

ফেতরা প্রদান রোজাকে পূর্ণতা দান করে যেভাবে নামাযে মহানবীর উপর দরুদ পাঠ করলে নামাযকে পূর্ণতা দান করে । অতএব কোন ব্যক্তি যদি মাহে রমজানের রোজা পালনের পর ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেতরা না দেন তাহলে তার অবস্থা ঐ লোকের মতো যে আদৌ রোজা রাখেনি । ঠিক একইভাবে নামাযে মহানবীর প্রতি দরুদ পাঠ না করলে তার নামে কোন নামাযই লিপিবদ্ধ করা হবে না । (আল-ফকিহ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৮৩)

আরো বর্ণিত হয়েছে: যাকাত-আল-ফিতর প্রদান পরিবারের সদস্যদের বিপদাপদ থেকে জীবন রক্ষা করে । [ উসুল আল-কাফি, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৭৪ ]

ফেতরা কখন প্রদান করতে হবে?

মাহে রমজানের শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পরপরই ফেতরা আলাদা করে রাখতে পারবেন।যদি কেউ ঈদের নামাজে শরীক হন তাহলে তার জন্য সতর্কতা মূলক ফরজ হলো ঈদের নামাজ পড়ার পূর্বে ফেতরা প্রদান করবেন অথবা আলাদা করে রাখবেন। আর যেব্যক্তি ঈদের নামাজে শরীক হবেন না তার জন্য ফেতরা প্রদানের সময়সীমা হলো ঈদের দিন যোহরের ওয়াক্ত পর্যন্ত।

প্রশ্ন: মাহে রমজান শেষ হওয়ার আগে কি ফেতরা প্রদান করা যাবে ?

উত্তর: মাহে রমজান শেষ হওয়ার পূর্বে প্রদানকৃত “যাকাত” যাকাতুল ফেতরা হিসাবে পরিগণিত হবে না ।

কোন কোন ব্যক্তির প্রতি ফিতরা ফরজ ?

ছাদাক্বাতুল ফিতর মুসলমান নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, সকলের জন্য আদায় করা ফরয। এমন কি যে মালিকের গৃহে অমুসলিম দাস-দাসী আছেন যারা মালিকের রিজিক থেকে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তাদের ফেতরা ও ঐ মুসলমান মালিকের উপর ফরজ। অতএব প্রত্যেক ব্যক্তির শরীয়তি আওতাধীন যারা ঐ কর্তার জীবিকা থেকে আহার্য গ্রহণ করে থাকেন তাদের সকলে ফেতরা  ঐকর্তার উপর ফরজ।

ছাদাক্বাতুল ফিতরের পরিমাণঃ

এক সা‘[প্রায় তিন কেজি] পরিমাণ ।

ফেতরাস্বরূপ কোন কোন জিনিস দিবেন ?

প্রসিদ্ধ উক্তি হলো ঐ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের মুল খাদ্যশস্যকে যাকাতুল ফেতরা হিসাবে প্রদান করতে পারবেন । যেমন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ চাউল খেয়ে থাকেন। অতএব তিন কেজি পরিমাণ চাউল অথবা সমপরিমাণ অর্থও দিতে পারবেন ।

ফেতরা কাকে দিবেন:

গরীব, দুঃস্থ, অসহায়, অভাবগ্রস্থ ব্যক্তিকে ফিতরা প্রদান করা যাবে। তবে যারা সৈয়দ নন তাদের ফেতরা কোন সৈয়দ ব্যক্তি গ্রহণ করতে পারবেন না ।

কাজের লোকের ফিতরা:

বেতনভুক্ত কাজের ব্যক্তি যিনি মালিকের আহার খেয়ে থাকেন তারও ফেতরা মালিকের উপর আবশ্যক।