এস, এ, এ
মহানবী (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি পবিত্র রজব মাসে ১০০ বার এই ইস্তিগফারটি পাঠ করবে এবং সাদক্বা দান করবে তার ওপর মহান আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত বর্ষিত হবে, আর যে ব্যক্তি এই ইস্তিগফারটি ৪০০ বার পড়বে তাকে আল্লাহ ১০০জন শহীদের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন। ইস্তিগফারটি নিন্মরূপ:
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ اِلاَّ هُوَ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَ أَتُوبُ إلَيهِ
মহানবী (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে : যে ব্যক্তি রজব মাসে এক হাজার বার (لاَ إلَهَ اِلاَّ اللَّه) পাঠ করবে, আল্লাহ তাকে ১ লক্ষ সওয়াব দান করবেন এবং তার জন্য বেহেশতে একশত শহর নির্মাণ করে দিবেন।
রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে: যে ব্যক্তি রজব মাসের সকালে ৭০ বার ও রাতে ৭০ বার “أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَ أَتُوبُ إِلَيْهِ”পাঠ করে এবং যিক্র শেষ হওয়ার পর হাতদ্বয়কে উঁচু করে বলবে : “اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَ تُبْ عَلَيَّ” “হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও এবং আমার তওবাকে তুমি কবুল করে নাও” এমতাবস্থায় সে যদি রজব মাসে মারা যায় তবে আল্লাহ্ তার উপর সন্তুষ্ট থাকবেন এবং পবিত্র রজব মাসের বরকতে (জাহান্নামের) আগুন তাকে স্পর্শ করবে না।
এই মাসে সর্বমোট ১০০০ বার নিন্মোক্ত ইস্তিগফারটি পাঠ করলে পরম করুণাময় আল্লাহ্ ইস্তিগফার পাঠকারীর সকল গুনাহসমূহকে ক্ষমা করে দিবেন:
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ ذَا الْجَلالِ وَ الْإِكْرَامِ مِنْ جَمِيعِ الذُّنُوبِ وَ الْآثَامِ
সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) তার গ্রন্থে মহানবী (স.) হতে বর্ণিত একটি রেওয়ায়েত এভাবে উল্লেখ করেছেন যে, রাসুল (সা.) রজব মাসে সুরা ইখলাস পাঠের বিষয়ে ব্যাপক ফজিলতের কথা উল্লেখ করেছেন যে, এ মাসে ১০ হাজার, ১ হাজার অথবা ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করা উত্তম। এছাড়া আরো বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি রজব মাসের শুক্রবার দিনে ১০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন একটি নূর তাকে বেহেশতের দিকে পথ প্রদর্শন করবে।
সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, কেউ যদি রজব মাসে একদিন রোজা রাখে এবং চার রাকাত নামাজ পড়ে তাহলে তার মৃত্যুর পূর্বে সে বেহেশতে তার অবস্থানকে অবলোকন করতে পারবে অথবা অন্য কেউ তার অবস্থানকে দেখতে পাবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ১০০ বার আয়াতুল কুরসী এবং দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ২০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে।
সৈয়দ ইবনে তাউস (রহ.) মহানবী (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন: কোন ব্যক্তি যদি রজব মাসের শুক্রবারে যোহর ও আসরের নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে (দুই রাকাত করে) ৪ রাকাত নামাজ পড়ে। তাহলে যেদিন হতে সে এ নামাজটি পড়েছে, সেই দিন হতে মৃত্যু অবধি আল্লাহ তাকে প্রত্যেদিন ১ হাজার সওয়াব দান করবেন, যে সকল আয়াত সে পাঠ করেছে প্রতিটি আয়াতের পরিবর্তে বেহেশতে একটি করে লাল রুবি পাথরের শহর তৈরী করে দিবেন, প্রতিটি অক্ষরের বিনিময়ে বেহেশতে একটি করে সাদা পাথরের প্রাসাদ নির্মাণ করবেন, হুরুল আইনের সাথে তার বিবাহ দিবেন এবং তার ওপর সন্তুষ্ট থাকবেন। আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন, তাকে ইবাদতকারীদের সারিতে স্থান দান করবেন এবং অবশেষে সে ক্ষমা মার্জিত হওয়ার পরে সৌভাগ্যর চরম উৎকর্ষে পৌছাবে। নামাজটি পড়ার পদ্ধতি: প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ৭ বার আয়াতুল কুরসী, ৫ বার সুরা ইখলাস এবং ১০ বার
“أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لا إِلَهَ إِلا هُوَ وَ أَسْأَلُهُ التَّوْبَةَ”
পাঠ করতে হবে এবং দ্বিতীয় রাকাতটি অনুরূপ পদ্ধতিতে পড়তে হবে। পরবর্তি দুই রাকাত নামাজ উল্লেখিত পদ্ধতিতে আদায় করতে হবে।
এই মাসে তিনদিন (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার) রোজা রাখা মুস্তাহাব। রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি হারাম মাসসমূহের যে কোন একটিতে এই তিন দিন রোজা রাখবে, আল্লাহ তাকে ৯০০ বছরের ইবাদতের সমপরিমাণ সওয়াব দান করবেন।
তথ্যসূত্র:
মাফাতিহুল জিনান, দ্বিতীয় অধ্যায় রজব মাস, পৃষ্ঠা ২৩০- ২৩১।